তৎসম চেনার সহজ কৌশল
সংস্কৃত হতে পাওয়া বাংলা ব্যাকরণমতে, কোনো শব্দের সঙ্গে ‘অ’, ‘য’, ‘ইক’ প্রভৃতি প্রত্যয় যুক্ত হলে সাধারণত শব্দের আদি স্বরের বৃদ্ধি ঘটে। যেমন: √বস্+অ= বাস ( অ>আ হয়েছে। অর্থাৎ ‘ব’ হয়েছে ‘বা’)। তেমনি, দরিদ্র+য= দারিদ্র্য, √স্থির্+য= স্থৈর্য, √গ্রহ্+য= গ্রাহ্য; ধর্ম+ইক= ধার্মিক, প্রতিষ্ঠান + ইক = প্রাতিষ্ঠানিক, অনুষ্ঠান+ ইক = আনুষ্ঠানিক, অনুষঙ্গ + ইক= আনুষঙ্গিক. দিন+ইক= দৈনিক, বিচার+ইক = বৈচারিক।
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান ২০১৬-এ দেখতে পাই— ব্যবহার+ইক= ব্যাবহারিক। যেখানে আদিস্বর অ>আ হয়েছে। কিন্তু, ব্যবহার+য= ব্যবহার্য লিখা হয়েছে যেখানে ‘অ’ এর বৃদ্ধি হয়নি। তাহলে, ‘ব্যবহার’ শব্দকে কোন হেতুতে ‘আ-কার’ দিকে ‘ব্যবহারিক’ করা হলো?
১. আগের বহুল প্রচলিত ‘ব্যবহারিক’ শব্দকে ‘ইক’ প্রত্যয়ের দোহাই দিয়ে ‘ব্যাবহারিক‘ করা হলেও ‘য-প্রত্যয়’-যুক্ত ‘ব্যবহার’ শব্দকে ‘ব্যাবহার্য’ করা হলো না কেন?
২. ‘ব্যবহারিক’ বানান কী ব্যাকরণমতে অশুদ্ধ? তাহলে এতদিন কেন অভিধানে এই অশুদ্ধ শব্দকে শুদ্ধ হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল? ব্যাকরণমতে, যদি ‘ব্যবহারিক’ বানান অশুদ্ধ হয়, তাহলে ‘ব্যবহার্য’ বানানটিও অশুদ্ধ।
৩। শুবাচি আশরাফুল আলম, শুবাচ গোষ্ঠীর জানালায় লিখেছেন — ‘ব্যবহারিক’ শব্দের আদিস্বর কি ‘অ’ নাকি অর্ধস্বর— ই্’/এ্? যদি আদিস্বর ই্/এ্ হয়, তবে ব্যবহারিক শব্দের সাথে ‘ইক’ যুক্ত হলে কোনটি বৃদ্ধি পাওয়া উচিত ‘অ’ না কি ‘ই্/এ্’?