মাতৃভাষা চর্চার প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক চেষ্টা
প্রাচীনকালে বৌদ্ধ বিহারে এবং মধ্যযুগে মুঘল আমলে পাঠশালায় বাংলাভাষা চর্চার জন্য বেসরকারিভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ গবেষক মিস্টার ওয়ার্ড লিখেছেন, বাংলার প্রায় সকল গ্রামে লেখা-পড়া এবং গণিতবিদ্যা শেখানোর পাঠশালা ছিল। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম কেরি বাংলা শিক্ষার প্রচার ও প্রসারের জন্য নিবিড় কার্যক্রম শুরু করেন। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মাত্র সতের বছরে উইলিয়াম কেরি ও তাঁর বন্ধুদের প্রচেষ্টায় শ্রীরামপুর মিশনের চারপাশে ৪৫ টি পাঠশালা গড়ে উঠে। অনুমান দুই হাজার শিক্ষার্থী পাঠশালাগুলোতে বিদ্যা শিক্ষা করত। একই সঙ্গে পাদরি রবার্ট প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্ব-উদ্ভাবিত প্রাথমিক শিক্ষা চালু করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে এ ধরণের পাঠশালার সংখ্যা ৩৬ ছড়িয়ে যায়। যাতে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছিল। ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই জানুয়ারি হতে বাংলা পাঠশালার কাজ শুরু হয়।
পাকিস্তানে বাংলা ভাষাভাষী জনসংখ্যা
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের প্রারম্ভে পাকিস্তানের মোট ছয় কোটি নব্বই লক্ষ অধিবাসীর মধ্যে চার কোটি চলি¬শ লাল ছিল বাংলাভাষী। পাকিস্তানে পাঞ্জাবি, সিন্ধি, বালুচি, উর্দু, পশতু, ব্রাহুই, কাশ্মীরি ভাষাভাষীদের মোট সংখ্যার চেয়ে বাংলাভাষী জনগণের সংখ্যা বেশি ছিল। তবু পাকিস্তানিরা উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা না করার ষড়যন্ত্রে করেছিল।