ড. মোহাম্মদ আমীন
মহাশূন্য
মহাশূন্য অথবা মহাকাশ বলতে সাধারণভাবে অনন্ত আকাশ বোঝানো হলেও প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর বায়মণ্ডল-সমৃদ্ধ আকাশকে পৃথিবীর আকাশ বলা হয়। তাই পৃথিবীর পেুক্ষাপটে মহাকাশ হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরের অনন্ত স্থান। এ আকাশসীমায় অতি অল্প ঘনত্বের বস্তু বিদ্যমান। অর্থাৎ শূন্য মহাশূন্য পুরোপুরি ফাঁকা নয়। প্রধানত, অতি অল্প পরিমাণ হাইড্রোজেন প্লাজমা, তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ, চৌম্বক ক্ষেত্র এবং নিউট্রিনো এই শূন্যে অবস্থান করে। মহাশূন্য এমন অনেক কিছু আছে যা মানুষ এখনো ভাবতেও পারেনি।
বায়ুমণ্ডল
বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীকে চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বুঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডলও বলা হয়। এই বায়ুমণ্ডল সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এছাড় তাপ ধরে রাখা বা গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে এবং দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস করে। যদি বায়ু-ল না থাকত তবে আকাশের রং হতো কালো ।
বায়ু বা বাতাস
শ্বাস-প্রশ্বাস ও সালোকসংশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসসমূহের প্রচলিত নাম বায়ু বা বাতাস। পরিমাণের দিক থেকে শুষ্ক বাতাসে ৭৮.০৯ ভাগ নাইট্রোজেন,২০.৯৫ ভাগ অক্সিজেন, ০.৯৩ ভাগ আর্গন, ০.০৩ ভাগ কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং সামান্য পরিমাণে অন্যান্য গ্যাস থাকে। এছাড়াও রয়েছে পরিবর্তনশীল পরিমাণ জলীয় বাষ্প। যার গড় প্রায় ১ ভাগ। বাতাসের পরিমাণ ও বায়ুম-লীয় চাপ বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন রকম হয়। স্থলজ উদ্ভিদ ও স্থলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার উপযুক্ত বাতাস কেবল পৃথিবীর ট্রপোমণ্ডল এবং কৃত্রিম বায়ুমণ্ডলসমূহে পাওয়া যায়।
বায়ুমণ্ডলের সীমানা
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কোন সুনির্দিষ্ট সীমানা নেই, ধীরে ধীরে পাতলা এবং হালকা হয়ে বহিঃমহাকাশের সাথে মিশে গেছে। বায়ুমণ্ডলের তিন-চতুর্থাংশের ভর রয়েছে এটির মোট অংশের প্রথম ১১ কিমি (৬.৮ মা) এর মধ্যে। এর সবচেয়ে নীচের স্তরটির নাম হল ট্রপোস্ফিয়ার। সূর্য থেকে আসা তাপের প্রভাবে এই স্তররটি এবং এর নীচে থাকা ভূ-পৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়, ফলে বাতাসের সম্প্রসারণ ঘটে। এই নিম্ন ঘনত্বের বাতাস উপরের দিকে উঠে যায় এবং এটির জায়গা দখল করে ঠান্ডা, উচ্চ ঘনত্বের বাতাস। ফলে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়।
বায়ুমণ্ডলের ভর এবং বায়ুমণ্ডল ও মহাশূন্যের সীমা
বায়ুম-লের ভর হচ্ছে প্রায় ৫X১০000000000000000000 কেজি, যার তিন চতুর্থাংশ পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রায় ১১ কিলোমিটারের বা ৩৬,০০০ ফুট বা ৬.৮ মাইলের মধ্যে। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমন্ডল পাতলা হতে থাকে। বায়ুমণ্ডল ও মহাশূন্যের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই।
অ্যাইরলজি বা বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং তার প্রক্রিয়া নিয়ে চর্চা করাকে বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান বা অ্যাইরলজি বলা হয়। লিওন টিইসারিয়েক ডি বর্ট ও রিচার্ড অ্যাসম্যান আইরলজির পথিকৃৎ।
দেখুন: ভূগোল সাধারণ জ্ঞান লিংক