শুবাচি খুরশেদ আহমেদ
‘ভূত’─যার উচ্চারণ ‘ভুত্’─সে-শব্দটি সংস্কৃত, তথা তৎসম;
এবং
শব্দটির একটি অর্থ ‘কল্পিত অশরীরী আত্মা (ভূতের ভয়)’,
যেভাবে লিখেছে বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান [প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০১৬]।
এই অভিধান ‘ভূত’ শীর্ষক ভুক্তিতে ‘ভূত’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি দেখিয়েছে এভাবে:
‘[স. √ভূ+ত]’;
এবং
‘তৎসম’ শীর্ষক ভুক্তিতে ‘তৎসম’ শব্দের ব্যাকরণিক সংজ্ঞার্থ লিখেছে এভাবে:
“(ব্যা.) সংস্কৃত থেকে গৃহীত ও বাংলায় অবিকৃতরূপে প্রচলিত।”
এই একই অভিধান ‘ভূতুড়ে’ শীর্ষক ভুক্তিতে শব্দটি লিখেছে শব্দটির বানানে ভ-য়ে দীর্ঘ ঊ-কার দিয়ে, এবং শব্দটির ব্যুৎপত্তি দেখিয়েছে ‘[বা.]’ অর্থাৎ ‘বাংলা’।
‘ভূতুড়ে’ বাংলা শব্দ, অর্থাৎ, শব্দটি সংস্কৃত বা তৎসম নয়;
তৎসত্ত্বেও শব্দটি লেখা হল ভ-য়ে দীর্ঘ ঊ-কার দিয়ে,
যেখানে বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম [পরিমার্জিত সংস্করণ ২০১২]-এর নিয়ম ২.১ বলেছে:
“সকল অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দে কেবল ই এবং উ এবং এদের কারচিহ্ন ি ু ব্যবহৃত হবে।”
এবং
যেখানে বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান তার মুখবন্ধে দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছে:
“এই অভিধানে ২০১২ সালে প্রকাশিত ‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ অনুসরণ করা হয়েছে।”
আমি ঠিক মিলাতে পারছি না
(ক) বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে
‘ভূতুড়ে’ শব্দটির বানানে ভ-য়ে দীর্ঘ ঊ-কার;
(খ) একই অভিধান অনুযায়ী,
‘ভূতুড়ে’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি ‘[বা.]’ অর্থাৎ ‘বাংলা’;
(গ) একই অভিধান অনুযায়ী,
‘তৎসম’ শব্দের ব্যাকরণিক সংজ্ঞার্থ:
“(ব্যা.) সংস্কৃত থেকে গৃহীত ও বাংলায় অবিকৃতরূপে প্রচলিত”;
(ঘ) একই অভিধানের মুখবন্ধের দাবি:
“এই অভিধানে ২০১২ সালে প্রকাশিত ‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ অনুসরণ করা হয়েছে”; এবং
(ঙ) বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম ২.১:
“সকল অতৎসম … শব্দে কেবল ই এবং উ এবং এদের কারচিহ্ন ি ু ব্যবহৃত হবে।”
আপনি পারছেন কি, প্রিয় শুবাচি?