ড. মোহাম্মদ আমীন
‘ভূ’ মানে ভূমি, মাটি, পৃথিবী প্রভৃতি। ভূগোল, ভূমণ্ডল, ভূমিকম্প, ভূপৃষ্ঠ, ভূতল, ভূধর, ভূম, ভূম্যাধিকারী, ভূলোক, ভূর্লোক প্রভৃতি বানানে ‘দীর্ঘ ঊ-কার’ হলেও ‘ভুবন’ বানানে ‘হ্রস্ব উ-কার। ভূগোল, ভূমণ্ডল, ভূমিকম্প, ভূপৃষ্ঠ, ভূতল, ভূধর, ভূম, ভূম্যাধিকারী, ভূলোক, ভূর্লোক প্রভৃতি শব্দের উৎসমূল ‘ভূ’ বা ‘ভূমি’ বা ‘মাটি’। এসব শব্দ ‘ভূমি’ বা মাটির সঙ্গে সর্ম্পকিত। তাই এসব শব্দের ‘ভূ’ দীর্ঘ-ঊকার।
কিন্তু ‘ভুবন’ শব্দের উৎস ‘ভূ’ বা মাটি নয়। ভারতীয় পুরাণে বর্ণিত ‘সপ্তস্বর্গ ও সপ্তপাতাল’কে একত্রে ভুবন বলা হয়— যা ভূ-এর ওপরে বা নিচে অবস্থিত। ভুবন নিজেই একটি নির্দিষ্ট অর্থ স্বাধীনভাবে ধারণ করে। ‘ভুবন’ এর ‘ভু’ যেমন মাটি নয়, তেমনি এর অন্তর্গত ‘বন’ কোনো জঙ্গলও নয়। কাজেই নজরুল ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ’ গজলে ‘ত্রিভুবন’ বলতে শুধু পৃথিবীকে প্রকাশ করেননি, ‘সপ্ত স্বর্গ ও সপ্ত পাতাল’ও বুঝিয়েছেন। তবে ‘ভূ’ বা ‘ভূমি’ বা ‘মাটি’ যেহেতু ‘ভুবন’-এর একটি অংশ তাই অনেকে ভুবন শব্দটি ‘পৃথিবী’র একটি সমার্থক শব্দ হিসাবেও ব্যবহার করে থাকেন। তবে নেপালের ‘তিভুবন’ বিমান বন্দর ভূয়ে হলেও উ-কার। এটি একটি নাম, তাই।
———————————————————-
কি না বনাম কিনা এবং না কি বনাম নাকি