মালাউই (Malawi) : ইতিহাস ও নামকরণ

কীভাবে হলো দেশের নাম

ড. মোহাম্মদ আমীন

মালাউই (Malawi)

মালাউই (Malawi) একটি স্থানীয় ভাষার শব্দ। এর বাংলা জ্বলন্ত বারি বা জিহ্বা। মালাউইর প্রাচীন নাম নায়াসাল্যান্ড। স্থানীয় ভাষায় নায়াসা (Nyasa) অর্থ হ্রদ। কথিত হয়, মালাউই হ্রদে সূর্যের রশ্মি প্রতিফলনের পর যে অপূর্ব প্রতিচ্ছবির সৃষ্টি হয়, সেটি হতে এমন অর্থ ও নাম এসেছে। দেশটির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হ্যাস্টিংস বান্দা (Hastings Banda) এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রাচীন ফ্রান্সের এক পুরাতন ম্যাপে বোরোরো (Bororo) অঞ্চলে ল্যাক মারাভি (Lac Maravi) নামের একটি হ্রদ দেখেছিলেন। এর পূর্ণ নাম ছিল “La Basse Guinee Con[t]enant Les Royaumes de Loango, de Congo, d’Angola et de Benguela”। তখন তিনি মনে করেন যে, দেশটির নাম নায়াসা (Nyasa) থেকে পরিবর্তন করে মালাউই রাখা উচিত। তিনি আরও বলেন, বর্তমান মালাউই হ্রদের সঙ্গে লেক মারাউইর কোনো সম্পর্ক নেই। সে সময় বান্দার এত প্রভাব ছিল যে, ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার পর দেশটির নাম নায়সাল্যান্ড (Nyasaland) পরিবর্তন করে মালাউই রাখার প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়।

অন্য একটি ব্যাখ্যামতে, নায়ানজা গোষ্ঠীর লোকদের প্রাচীন নাম ছিল মারাভি (Maravi)। এর অর্থ আফ্রিকার উষ্ণ হৃদয় (The Warm Heart of Africa)।

ইউরোপীয়ানদের মধ্যে প্রথম পর্তুগিজরাই মালাউইয়ানদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আইভরি, লৌহ ও দাস ব্যবসা শুরু করে। পর্তুগিজরাই এখানে ভুট্টার প্রচলন ঘটায়। এখনও ভুটো মালাউইয়ের প্রধান খাদ্য। মালাউই উপকূলে রাতে জেলেদের মাছধরা নৌকায় হারিকেনের আলো মিটমিট করে জ্বলত। দূর থেকে মনে হতো রাশি রাশি তারা জ্বলছে। এটি দেখে স্কটিস অভিযাত্রী ডেভিড লিভিংস্টোন একসময় মালাউইকে তারকা হ্রদ (The Lake of the Stars) বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

মালাউই-এর মোট আয়তন ১,১৮,৪৮৪ বর্গকিলোমিটার বা ৪৫,৭৪৭ বর্গমাইল। তন্মধ্যে জলীয় ভাগের পরিমাণ ২০.৬%। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের হিসাবমতে, মালাউইর জনসংখ্যা ১,৬৪,০৭,০০০ জন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটার লোকসংখ্যা ১২৮.৮ জন। আয়তন বিবেচনায় মালাউই পৃথিবীর ৯৯-তম বৃহত্তম দেশ এবং জনসংখ্যা বিবেচনায় ৬৪-তম। কিন্তু জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় মালাউই পৃথিবীর ৮৬-তম জনবহুল দেশ।

২০১২ খ্রিস্টাব্দের হিসাবমতে, মালাউইর জিডিপি (পিপিপি) ১৪.২৬৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং মাথাপিছু আয় ৮৫৭ ইউএস ডলার। অন্যদিকে, জিডিপি (নমিনাল) ৪.২১২ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং মাথাপিছু আয় ২৫৩ ইউএস ডলার। মুদ্রার নাম কওয়াচা। রাজধানী লিলঙ্গোয়া (Lilongwe)। সরকারিভাবে মালাউইর অধিবাসীদের মালাউয়াইন বলা হয়।

১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুলাই মাসে দেশটি যুক্তরাজ্য হতে স্বাধীনতা লাভ করে। সরকারি ভাষা ইংরেজি। তবে স্থানীয় চিচেওয়া (Chichewa) ভাষাও সরকারিভাবে স্বীকৃত। ২০১০ খ্রিস্টাব্দের হিসাবমতে, জনগণের ৬৮% খ্রিস্টান, ২৫% মুসলিম এবং ৫% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুলাই মালাউইর পতাকা প্রথম গৃহীত হয়। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে তা কিছুটা পরিবর্তন করে পুনরায় গৃহীত হয়।

মালাউই-এর মোট আয়তন ১,১৮,৪৮৪ বর্গকিলোমিটার বা ৪৫,৭৪৭ বর্গমাইল। তন্মধ্যে জলীয় ভাগের পরিমাণ ২০.৬%। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের হিসাবমতে, মালাউইর জনসংখ্যা ১,৬৪,০৭,০০০ জন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটার লোকসংখ্যা ১২৮.৮ জন । আয়তন বিবেচনায় মালাউই পৃথিবীর ৯৯-তম বৃহত্তম দেশ এবং জনসংখ্যা বিবেচনায় ৬৪-তম। কিন্তু জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় মালাউই পৃথিবীর ৮৬-তম জনবহুল দেশ।

২০১২ খ্রিস্টাব্দের হিসাবমতে, মালাউইর জিডিপি (পিপিপি) ১৪.২৬৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং মাথাপিছু আয় ৮৫৭ ইউএস ডলার। অন্যদিকে, জিডিপি (নমিনাল) ৪.২১২ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং মাথাপিছু আয় ২৫৩ ইউএস ডলার। মুদ্রার নাম কওয়াচা। সরকারিভাবে মালাউইর অধিবাসীদের মালাউয়াইন বলা হয়। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে দেশটি যুক্তরাজ্য হতে স্বাধীনতা লাভ করে। সরকারি ভাষা ইংরেজি। তবে স্থানীয় চিচেওয়া ভাষাও সরকারিভাবে স্বীকৃত। ২০১০ খ্রিস্টাব্দের হিসাবমতে, জনগণের ৬৮% খ্রিস্টান, ২৫% মুসলিম এবং ৫% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

মালউইয়ান সমাজ এত সহজ-সরল যে, একবিংশ শতকেও একটি ক্যামেরা কিংবা একটা মোবাইল ফোন দেখলে শত শত মানুষ তা একনজর দেখার জন্য জড়ো হয়ে যায়। গভীর উৎসুক চোখে দেখে। পপ তারকা ম্যাডোনা এক মালাউইয়ান এতিমকে দত্তক নিয়েছিলেন। ডেনমার্কের ব্যতিক্রম বাদ দিলে মালাউই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে চার্লসবার্গ কারখানা (Carlsberg factory) রয়েছে। এখানে মাত্র ৩৫ পেনি দিয়ে চার্লসবার্গ বিয়ার পাওয়া যায়। এখানে দেখা যায়, ১২ সিটের একটি বাসে একত্রে মানুষ, ছাগল, মুরগি এবং শাকসব্জি গাদাগাদি করে চালিয়ে নিতে।

মালাউইয়ের গ্রামে মালাউইয়ান মহিলাই গ্রাম প্রধানের দায়িত্ব পালন করে। যা আমাদের দেশে মেয়র নামে পরিচত। অনেক মেয়র অশিক্ষিত থাকে। তাই কোনো পুরুষ সেক্রেটারি তাকে দায়িত্ব পালনে সহায়তা করে থাকে। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কাজে মেয়রের গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে অনেক হ্রদ আছে। হ্রদগুলো রঙবেরঙের নানা মাছে পূর্ণ থাকে। ইউরোপ ও আমেরিকায় এখানে থেকে নানা রঙের সৌখিন মাছ রপ্তানি করা হয়।

ইকুয়েটরিয়াল গিনি (Equatorial Guinea) : ইতিহাস ও নামকরণ

ইরিত্রিয়া (Eritrea) : ইতিহাস ও নামকরণ

ইথিওপিয়া (Ethiopia) : ইতিহাস ও নামকরণ

গ্যাবন (Gabon): ইতিহাস ও নামকরণ

ঘানা (Ghana) : ইতিহাস ও নামকরণ

রোয়ান্ডা (Rwanda) : ইতিহাস ও নামকরণ

গিনি (Guinea) : ইতিহাস ও নামকরণ

গিনি-বিসাউ (Guinea-Bissau) : ইতিহাস ও নামকরণ

কেনিয়া (Kenya) : ইতিহাস ও নামকরণ

লেসোথো (Lesotho): ইতিহাস ও নামকরণ

লাইবেরিয়া (Liberia) : ইতিহাস ও নামকরণ

লিবিয়িা (Libya) : ইতিহাস ও নামকরণ

মাদাগাস্কার (Madagascar) : ইতিহাস ও নামকরণ

 সূত্র: কীভাবে হলো দেশের নাম, ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।

Language
error: Content is protected !!