Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
যত দোষ নন্দ ঘোষ প্রফুল্ল চালশে – Dr. Mohammed Amin

যত দোষ নন্দ ঘোষ প্রফুল্ল চালশে

ড. মোহাম্মদ আমীন

যত দোষ নন্দ ঘোষ:

এই বাগ্‌ধারাটি শ্রীকৃষ্ণের পালকপিতা নন্দ গোয়ালা বা নন্দ ঘোষের সঙ্গে সম্পর্কিত। কৃষ্ণকৃত বা তৎসময়ে কৃষ্ণের দ্বারা বা অন্য কোনো উপায়ে সংঘটিত সকল অঘটনের দায় বর্তানো হতো নন্দ ঘোষের কাঁধে। দোষের কোনো কিছু হলে তা যে করুক বলা হতো নন্দঘোষ করেছে। এভাবে সব দোষ নন্দ ঘোষের কাঁধে গিয়ে পড়ত।
আবার অনেকে মনে করেন রাজা নন্দকুমারের ফাঁসি হতে এই বাগ্‌ধারাটির উদ্ভব। রাজা নন্দকুমার ছিলেন নবাব সিরাজউদদৌলার অধীনে হুগলির গভর্নর। লর্ড ক্লাইভের আমলে তিনি কালো কর্নেল নামে পরিচিত ছিলেন। কারণ তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতি অনুগত ছিলেন। ১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে তিনি কাউন্সিলের সদস্য ফ্রান্সিস-এর কাছে এক চিঠিতে গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ঘুস গ্রহণের অভিযোগ আনয়ন করেন।
নন্দকুমার উল্লেখ করেন— হেস্টিংস, গুরুদাসকে দেওয়ান নিযুক্ত করার বিনিময়ে ১,০৪,১০৫ রুপি এবং মুন্নু বেগমকে নাবালক নবাব মুবারক-উদ-দৌলার অভিভাবক নিয়োগের বিনিময়ে ২,৫০,০০০ রুপি ঘুস গ্রহণ করেছেন। কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে ওয়ারেন হেস্টিংস-এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়। কাউন্সিল ঘুস হিসাবে গৃহীত টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ওয়ারেন হেস্টিংসের প্রতি নির্দেশ দেন। এ ঘটনার কয়েক মাস পর গভর্নর জেনারেল এবং বরওয়েল-এর উদ্যোগে ফক্স এবং রাধাচরণের সঙ্গে নন্দকুমারকে ষড়যন্ত্রের অপরাধে গ্রেফতার করা হয়।
ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি নন্দকুমারের নামে জালিয়াতির মামলা করা হয়। প্রধান বিচারপতি ইলিজা ইমপে ছিলেন হেস্টিংসের বন্ধু। ১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই জুন নন্দকুমারকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দেওয়া হয়। নন্দকুমারের আইনজীবী ১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই জুন হতে ৪ঠা জুলাই পর্যন্ত নন্দকুমারের জীবন রক্ষার্থে প্রিভি কাউন্সিলে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল এবং প্রিভি কাউন্সিলের রায় না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর না করার জন্য দরখাস্ত করেন। সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।
নবাব একটি পত্রে প্রিভি কাউন্সিলের রায় না পাওয়া পর্যন্ত দণ্ডাদেশ কার্যকর না করার অনুরোধ করেন। সে অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করা হয়। বলা হলো— যত দোষ সব করেছেন নন্দকুমার।
অবশেষে ১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই আগস্ট সকাল ৮টায় ফোর্ট উইলিয়ামের নিকটবর্তী কুলিবাজারে নন্দকুমারের ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয়।
‘যত দোষ … নন্দ ঘোষ’

চালশে: দৃষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত বয়সের কারণে ক্ষীণদৃষ্টি, দৃষ্টির ক্ষীণ অবস্থা, চোখের দৃষ্টি হ্রাস পাওয়ার লক্ষণ প্রভৃতি অর্থ প্রকাশে চালশে শব্দটি ব্যবহার করা হয়। সংখ্যাবাচক শব্দ চল্লিশ থেকে ‘চালশে’ শব্দের উদ্ভব। বয়স যখন চল্লিশ বা চল্লিশের কাছাকাছি হয় তখন সাধারণত চোখের দৃষ্টিতে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। কাছের জিনিস দেখতে বা বইপত্রের অক্ষর চিনতে সমস্যার সূচনা ঘটে। তখন মানুষ ভালোভাবে দেখার জন্য চশমা পরতে শুরু করে। চল্লিশের প্রভাবে চোখের এ সমস্যার সূচনাকে ‘চালশে’ বলা হয়। চল্লিশ পেরুলেই চালশে- – -।

ফুল থেকে ফুল্ল; ফুল থেকে প্রফুল্ল: প্রফুল্ল শব্দের আভিধানিক ও মূল অর্থ— হাস্যময়, উল্লসিত, প্রসন্ন, সহাস্য, আনন্দিত। ‘প্রফুল্ল’ শব্দের আদি ও মূল অর্থ: প্রস্ফুটিত। যা প্রকৃষ্টরূপে ফুটেছে তা-ই প্রফুল্ল। একসময় শব্দটি ফুল ফোটার, ফোটা ফুলের বিবরণ প্রদান প্রভৃতি কাব্যিক উপমা হিসাবে বাগানেই সীমাবদ্ধ ছিল। রবীন্দ্রনাথের গানেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়:

“নীলাঞ্জনছায়া, প্রফুল্ল কদম্ববন,
জম্বুপুঞ্জে শ্যাম বনান্ত, বনবীথিকা ঘনসুগন্ধ॥
মন্থর নব নীলনীরদ- পরিকীর্ণ দিগন্ত।
চিত্ত মোর পন্থহারা কান্তবিরহকান্তারে॥”
প্রফুল্ল এখন বাগানে আর নেই। সে এখন প্রসন্ন, সহাস্য, আনন্দিত এবং বদন, চিত্ত, মন প্রভৃতির আনন্দঘন প্রসন্নতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।যেমন: প্রফুল্লচিত্ত, প্রফুল্লবদন,
শান্তিজুড়ে চিত্ত বিনোদন।
ফুল ও বাগানের সঙ্গে জন্মগত সম্পর্ক ছিন্ন করে আমাদের সেই দারুণ চৌকশ ‘প্রফুল্ল’ বাগান ছেড়ে মানুষের হৃদয়-মন ও চিত্ত-বদনকে উৎফুল্লময় করে দেওয়ার জন্য উঠে এসেছে।
প্রফুল্ল, হয়তো বুঝতে পেরেছিল একদিন বাগানের সংখ্যা কমে যাবে। বাগান থাকলেও মানুষ আর বাগানে ফুল দেখতে যাবে না। বরং ফুলকে কেটে, জীবননাশ করে ঘরে এনে উপভোগ— দুঃখিত, ধর্ষণ করবে। দূরদর্শী প্রফুল্ল, তুমি বড়ো বুদ্ধিমান; বাগান ছেড়ে দিয়ে বদন আর চিত্তে চলে আসায় ঘরে বসে তুমি ফুলের সুবাস নিতে পারছ—
প্রফুল্ল বদনে, সদনে সদনে
অনন্ত অন্তর গগনে সঘনে।
——————–

All Link

All Links/1

 দেখুন আপনার পোস্ট/যযাতি কেন অনুমোদন হয় না। 

এক মিনিটের পাঠশালা/১

এক মিনিটের পাঠশালা/২

এক মিনিটের পাঠশালা/৩

এক মিনিটের পাঠশালা/৪

এক মিনিটের পাঠশালা/৫

এক মিনিটের পাঠশালা /৬

এক মিনিটের পাঠশালা /৭

এক মিনিটের পাঠশালা /৮

এক মিনিটের পাঠশালা /৯

এক মিনিটের পাঠশালা /১০

এক মিনিটের পাঠশালা /১১

এক মিনিটের পাঠশালা /১২

এক মিনিটের পাঠশালা /১৩

এক মিনিটের পাঠশালা /১৪

এক মিনিটের পাঠশালা /১৫

এক মিনিটের পাঠশালা /১৬

এক মিনিটের পাঠশালা /১৭

এক মিনিটের পাঠশালা /১৮

এক মিনিটের পাঠশালা/১৯

এক মিনিটের পাঠশালা /২০

এক মিনিটের পাঠশালা /২১

এক মিনিটের পাঠশালা /২২

এক মিনিটের পাঠশালা/২৩

এক মিনিটের পাঠশালা/২৪

এক মিনিটের পাঠশালা/২৫

এক মিনিটের পাঠশালা/২৬

শুবাচির প্রশ্ন থেকে শুবাচির উত্তর

বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস

বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস: সুরা, লেজেগোবরে, সাতসমুদ্র, বিরাশি সিক্কার চড়

বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস: বাটপাড়, ষোলোকলা, হাবভাব

বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস: বস্তাপচা বুলি, ফোড়ন কাটা, ফুলঝুরি

এক মিনিটের পাঠশালা/২

সূত্র: বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস, ড. মোহাম্মদ আমনি, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।

মাস্ক ( mask) ও করোনাভাইরাস জীবাণু বীজাণু এবং বিবিধ