ড. মোহাম্মদ আমীন
যে দেশে পুরুষ প্রসব করে সন্তান
স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমেরিকা গিয়েছেন। আমেরিকানরা ভারতীয়দের
সবসময় তাচ্ছিল্যের চোখে দেখতেন।তাদের কাছে ভারতীয়রা গোঁড়া, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, ধর্মান্ধ, আদিম এবং অসামাজিক জীবমানুষ হিসেবে পরিচিত ছিল। আমেরিকানরা মনে করত ব্রিটেনের উপনিবেশ ভারত এখনও আদিম যুগে। যেখানে সভ্যতার কোনো আলো পৌঁছেনি।

সভা শেষ করে বের হয়ে আসার পথে আমেরিকান এক ভদ্রলোকে স্বামীজিকে বললেন, আপনার কাছে আমার কিছু জানার আছে।
বলুন, কী জানতে চান; স্বামীজি বললেন।
আমেরিকান ভদ্রলোক বললেন, ভারতবর্ষে না কি কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করলেই তাকে গঙ্গার জলে ফেলে দেওয়া হয়?
স্বামীজি বললেন, আমি কিন্তু বেঁচে গিয়েছি।
কীভাবে বাঁচলেন?
নদীর চরে আটকে গেলাম। মাটি ঠেলে দিল কূলে।
এবার আমেরিকান ভদ্রলোক বললেন, আপনাদের দেশে কন্যা সন্তান জন্মালে না কি তাকে ক্ষুধার্ত কুমিরের মুখে ছুড়ে দেওয়া হয়?
স্বামী বিবেকানন্দ বললেন, আপনি ঠিকই শুনেছেন। সেজন্য ভারতবর্ষে কোনো মেয়ে নেই। সব পুরুষ।
আমেরিকান ভদ্রলোক বললেন, সন্তান প্রসব করে কে?
স্বামীজি বললেন, ভারতবর্ষে পুরুষরাই সন্তান প্রসব করে।
স্বামী বিবেকানন্দের জবাব শুনে আমেরিকান ভদ্রলোক চুপচাপ সরে পড়লেন।
[ এটি আমার বানানো কোনো গল্প নয়, স্বামীজির জীবনী এবং স্বামীজি বিষয়ে গুগুলে সার্চ দিলে পাবেন।]
——————————————————————
উৎস: বিখ্যাতদের কৌতুক হাস্যরস ও প্রজ্ঞাযশ (২য় খণ্ড), ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়।
মৃতের সংবাদ সম্মেলন
বার্ট্রান্ড রাসেল ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে চীনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। চীনের অনেক পত্রিকার সাংবাদিক তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে এলেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সাক্ষাৎকার দিতে পারছিলেন না। জাপানি পত্রিকার এক সাংবাদিক নাছোড়বান্দা। তিনি সাক্ষাৎকার
নেবেনই। অনেক কষ্ট করে জাপান থেকে এসেছেন। কিন্তু রাসেল সাক্ষাৎকার দেবেন না।

জাপানি সাংবাদিক রাসেলের সহকারীর মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। অবশেষে ওই পত্রিকা খবর ছাপিয়ে দিল, বার্ট্রান্ড রাসেল মারা গেছেন। রাসেল প্রতিবাদ পাঠালেন, কিন্তু পত্রিকায় ছাপা হলো না।
চীন থেকে ফেরার পথে রাসেল জাপান গেলেন। জাপানের প্রায় সব পত্রিকার সাংবাদিক রাসেলের সাক্ষাৎকার নিতে এলেন। তন্মধ্যে ওই সাংবাদিকও ছিলেন, যিনি রাসেলের মৃত্যু সংবাদ ছাপিয়ে দিয়েছিলেন।
রাসেল এবারও সাক্ষাৎকার দিলেন না। তবে তাঁর সহকারীর মাধ্যমে সব সাংবাদিকের হাতে একটি করে ছোটো চিরকুট ধরিয়ে দিলেন। চিরকুটে লেখা ছিল: “বাট্রান্ড রাসেল মারা যাওয়ার তাঁর পক্ষে সাক্ষাৎকার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
নিচে রাসেলের বহুল পরিচিত স্বাক্ষর।
সূত্র: বিখ্যাতদের কৌতুক হাস্যরস ও প্রজ্ঞাযশ, ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
————————–