ড. মোহাম্মদ আমীন
চিত্রাঙ্গদা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কাব্যনাট্য। প্রকাশকাল ২৮ ভাদ্র, ১২৯৯ মোতাবেক ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দ। মহাভারতে বর্ণিত অর্জুন-চিত্রাঙ্গদার প্রণয়োপাখ্যান অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত এই কাব্যনাট্যের মূল উপজীব্য। এই কাব্যনাট্য অবলম্বনেই ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা রচনা করেন। সূচনায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন:“— সুন্দরী যুবতী যদি অনুভব করে যে সে তার যৌবনের মায়া দিয়ে প্রেমিকের হৃদয় ভুলিয়েছে, তা হলে সে তার সুরূপকেই আপন সৌভাগ্যের মুখ্য অংশে ভাগ বসাবার অভিযোগে সতিন বলে ধিক্কার দিতে পারে। এ যে তার বাইরের জিনিস, এ যেন ঋতুরাজ বসন্তের কাছ থেকে পাওয়া বর, ক্ষণিক মোহবিস্তারের দ্বারা জৈব উদ্দেশ্য সিদ্ধ করবার জন্যে। যদি তার অন্তরের মধ্যে যথার্থ চারিত্রশক্তি থাকে তবে সেই মোহমুক্ত শক্তির দানই তার প্রেমিকের পক্ষে মহৎ লাভ, যুগলজীবনের জয়যাত্রার সহায়। সেই দানেই আত্মার স্থায়ী পরিচয়; এর পরিণামে ক্লান্তি নেই, অবসাদ নেই, অভ্যাসের ধূলিপ্রলেপে উজ্জ্বলতার মালিন্য নেই। এই চারিত্রশক্তি জীবনের ধ্রুব সম্বল, নির্মম প্রকৃতির আশু প্রয়োজনের প্রতি তার নির্ভর নয়। অর্থাৎ, এর মূল্য মানবিক, এ নয় প্রাকৃতিক। এই ভাবটাকে নাট্য আকারে প্রকাশ -ইচ্ছা তখনই মনে এল; সেই সঙ্গেই মনে পড়ল মহাভারতের চিত্রাঙ্গদার কাহিনী।” রূপ-স্বরূপের প্রেমে অভিভূত মানব জীবনের একটি প্রকৃষ্ট কাহিনি চিত্রাঙ্গদা।
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক