ড. মোহাম্মদ আমীন
‘সোনার তরী’ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবি ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বহু-অর্থ দ্যোতিত দর্শন-মনস্তাত্ত্বিক কাব্যগ্রন্থ । কবি দেবেন্দ্রনাথ সেনের প্রতি উৎসর্গিত এই কাব্যগ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ প্রতিভার অনবদ্য মেধার বিরল ভাবনার এক কালজয়ী স্বাক্ষর। কবিতা কত শৈল্পিক, মূর্ত-অমূর্ত, পার্থিব- অপার্থিব এবং দর্শন-নন্দন ধারণায় অসীম ব্যাপ্তির বৈশ্বিক পরিধিকেও অতিক্রম করতে পারে- তার পরিচয় পাওয়া যায় ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থে। এই কাব্যগ্রন্থটির প্রতিটি কবিতায় দার্শনিক চিন্তার বিশাল অনুপমতা প্রতিটি শব্দকে মহাকাব্যে পরিণত করেছে যেন। সোনার তরী কাব্যগ্রন্থের শিরোনাম-কবিতা অর্থাৎ যে কবিতাটির নামে গ্রন্থটির নামকরণ করা হয়েছে সে কবিতাটির নাম ‘সোনার তরী’।এটি কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাও। বাংলা সাহিত্যের কয়েকটি বহুল পঠিত ও সর্বজন নন্দিত এবং আলোচিত কবিতার মধ্যে ‘সোনার তরী’ অন্যতম। কবিতাটির অর্থ-নিরূপণ নিয়ে যত নীরিক্ষা, আলোচনা-পর্যালোচনা এবং বাদ-প্রতিবাদ ও বৈচিত্র্যময় লেখালেখি হয়েছে- বাংলা সাহিত্যে আর কোনো কবিতা নিয়ে এমনটি হয়নি। ‘সোনার তরী’ কী? এর উত্তর নানাজনের কাছে থেকে নানাভাবে এসেছে। একটি কবিতা যখন ভিন্ন ভিন্ন পাঠক ভিন্ন ভিন্ন অর্থ আর ব্যাখ্যা দেয়- বলা যায় কবিতাটি তখনই সর্বজনীন, সার্থক এবং কাব্যিকতার পরম অলংকারে ভূষিত হয়। এরূপ বিশ্লেষণ আর বহুমাত্রিক অর্থ আর ব্যাখ্যা পাওয়া যায় রবীন্দ্রনাথের ‘সোনার তরী’ নিয়ে। সে হিসেবে ‘সোনার তরী’ বাংলা সাহিত্যের একটি অন্যতম সার্থক কবিতা। শুধু ‘সোনার তরী’ কবিতা নয়, এই কাব্যগ্রন্থের প্রত্যেকটি কবিতা এমন সার্থক রূপায়নের অনবদ্য নজিরে ভরপুর। পাঠককে এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা পার্থিব-অপার্থিব সমন্বয়ের সীমাহীন ক্ষেত্রে লীন করে দেয়- জীবন রহস্যের মতো ব্যাকুল মধুর দর্শন লালিত্যে। রবীন্দ্রনাথের সোনার তরী রবীন্দ্রনাথেরই আলেখ্য যেন। তিনি সোনার তরীতে আমাদের জন্য সোনা ধান তুলে দিয়ে মহাকালের নৌকায় শারীরিকভাবে লীন হলেও সৃষ্টির মাঝে আলোর মতো বিরজমান।জগৎ ও জীবনের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং এ দুটির নিবিড় সম্পর্কের মাধ্যমে পরামাত্মার আত্মবোধই ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু ।
ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা বইয়ের তালিকা
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১