Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
রহস্যময় শব্দসংসার (১) – Dr. Mohammed Amin

রহস্যময় শব্দসংসার (১)

রহস্যময় শব্দসংসার (১)

আবদুশ শাকুর

ঐশ্বর্য: শব্দের গৌরবহানির প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো ঐশ্বর্য শব্দটি। মূলত ঐশ্বর্যের সঙ্গে সম্পর্ক ঈশ্বরের, মনুষ্যের নয়। সংস্কৃত ভাষায় ঈশ্বর থেকে তৈরি ঐশ্বর্য শব্দের অর্থ ঈশ্বরের ভাব বা কর্ম, অলৌকিক গুণ বা শক্তি (যেমন বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বর্য রায়)। অথচ আজকাল ঐশ্বর্য বলতে আমরা মানুষের বিষয়-আশয়ই বুঝে থাকি এবং ঐশ্বর্য বলিও কেবল বিপুল ধনসম্পত্তি বোঝাতেই।

সংবাদ: সংবাদকে এককালে বলা হতো সন্দেশ। সন্দেশ শব্দের মূল অর্থ, যা সম্যকরূপে দিক-নির্দেশ দেয় এবং তা থেকে অর্থ দাঁড়ায় – যা সঠিক জিনিস জানায়। আগের দিনে কোনো আত্মীয়কে কোনো খবর দিতে হলে আত্মীয়বাড়িতে কিছু মিষ্টান্ন নিয়ে যাওয়া হতো। কালক্রমে এই অনুষঙ্গের সূত্রে সন্দেশের অর্থ দাঁড়ায় – দূতের উপসর্গটি বাদ দিয়ে শুধুই মিষ্টান্ন। তখন যে কোনো মিষ্টান্নই ছিল সন্দেশ। পরে অর্থের আরো পরিবর্তন ঘটে। সন্দেশ বলতে এখন শুধু বিশেষ এক রকমের মিষ্টান্নকেই বোঝায়। সন্দেশ শব্দের পরে আসে সংবাদ শব্দটি। সংবাদ শব্দের মূল অর্থ খবর নয় – পরস্পরে কথাবার্তা। মুসলমান আমলে আসে ফারসি শব্দ খবর। আজকের বাংলাদেশে খবর মানে খারাপ খবর। কথায় কথায় একে অপরকে ধমকাচ্ছে – এটা হলে ‘খবর’ আছে, ওটা করলে ‘খবর’ আছে। এর অর্থ হল শাস্তি আছে, বিশেষ বিপদ আছে ইত্যাদি।

শাক: শাক শব্দের প্রচলিত অর্থ হলো রেঁধে খাওয়ার যোগ্য এক ধরনের উদ্ভিদ বা লতাপাতা যেমন – পালং শাক, পুঁই শাক, ডাঁটা শাক, কলমি শাক, লাল শাক ইত্যাদি। তবে শাক শব্দের মূল অর্থ মানুষ ‘যা দ্বারা ভোজনে সমর্থ হয়’। ভাতের সঙ্গে নিদেনপক্ষে নিরামিষ হলেও ব্যঞ্জনের অনুষঙ্গ লাগে। এই অর্থে সকল প্রকার তরকারিই কিন্তু শাক। এজন্যেই সম্ভবত এককালে নিমন্ত্রণপত্রে লেখা হত – ‘শাকান্ন ভোজনে বাধিত করিবেন’। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে শাক ছয় রকমের – পত্র শাক যেমন পালং শাক, পুঁই শাক, কলমি শাক; পুষ্প শাক যেমন ফুলকপি, কলার মোচা, বকফুল, কুমড়োর ফুল; ফল শাক যেমন লাউ, কুমড়ো, বেগুন, পটল; নাল শাক যেমন লাউ-কুমড়োর লতা, কচুর লতি; কন্দ শাক যেমন আলু, ওল, কচু, মুলা; সংস্বেদজ শাক যেমন পাতাল কোঁড, মাশরুম ইত্যাদি।

বৃদ্ধ: প্রবীণ, বয়োজ্যেষ্ঠ, মুরবিব মানুষকে আমরা বৃদ্ধ বলে জানি। কত বছর বয়সের মানুষকে বৃদ্ধ বলা যাবে – এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বেশ কঠিন। সাধারণ হিসাবে প্রৌঢ়ত্বের পরে আসে বার্ধক্য। কিন্তু প্রৌঢ়ত্বের কালসীমা তো নির্ধারিত নেই। সনাতন ধর্মের স্মৃতিশাস্ত্র মতে, সত্তর বছর বয়সের ঊর্ধ্ববয়স্ক ব্যক্তি হলেন বৃদ্ধ। ভীমরতি বা ক্ষ্যাপামি দেখা দেয় বয়স সাতাত্তর বছর সাতমাস সাতরাত পূর্ণ হলে। দেখা যাচ্ছে বয়েস সত্তর বছর পার না হলে বৃদ্ধ হওয়া যায় না। অভিধান ও ব্যাকরণে বৃদ্ধের সঙ্গে বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। বৃদ্ধ শব্দের মূল অর্থ – বৃদ্ধিপ্রাপ্ত। প্রশ্ন হল কী বৃদ্ধিপ্রাপ্ত? জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা তো বটেই, তবে মনে হয় সেই সঙ্গে প্রেশার এবং সুগারও। (চলবে)

শুবাচে দিয়েছেন: প্রদীপ ভাদুড়ি

রহস্যময় শব্দসংসার: ওয়েবসাইট লিংক
শুবাচ গ্রুপের লিংক: www.draminbd.com
তিনে দুয়ে দশ: শেষ পর্ব ও সমগ্র শুবাচ লিংক

রহস্যময় শব্দসংসার: শুবাচ লিংক