Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
রহস্যময় শব্দসংসার (৪) – Dr. Mohammed Amin

রহস্যময় শব্দসংসার (৪)

রহস্যময় শব্দসংসার (৪)

আবদুশ শাকুর

রহস্যময় শব্দসংসার (৪)
ইস্তফা: আরবি ইসতিফা শব্দের অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা। শব্দটি বাংলায় এসে হয়েছে ইস্তফা, যার প্রকাশিত অর্থ হচ্ছে চাকরি পরিত্যাগ করা বা মাফ করবেন বলে অর্পিত কর্মের দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি চাওয়া। কোনো সংগঠনের সভাপতি বা সম্পাদক কোনো কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে কার্যনির্বাহী সভায় বলতে পারেন – আমি ইস্তফা দিচ্ছি, মানে মাফ চাচ্ছি – অর্থাৎ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইছি। ইস্তফা শব্দের সঙ্গে মাফ চাওয়া বা দুঃখিত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যাপারটা এখানে স্রেফ ভাষিক বিনয় – পদত্যাগ করলাম, বা চাকরি ছেড়ে দিলাম না বলে মাফ চাইলাম বলে বস্ত্তত দায়িত্বপালনে অপারগতা জ্ঞাপন করলাম। বাংলা ইস্তফা শব্দের অর্থ তাহলে আক্ষরিক নয়, আলংকারিক। তবে পদত্যাগ করার স্থলে ক্ষমা প্রার্থনা করার মতো আশ্চর্য মৃদুভাষণ বাংলা ভাষায় কী করে ঢুকলো ভেবে হয়রান হতে হয়।

শুশ্রূষা: শুশ্রূষার সঙ্গে সেবা শব্দের সম্পর্ক সুনিবিড়। অধিকাংশ সময়েই সেবা শব্দটা আগে বসে জোড় শব্দরূপে উচ্চারিত হয় – সেবাশুশ্রূষা। অভিধানে ও ব্যাকরণে শব্দ হিসাবে সেবা শব্দের সঙ্গে শুশ্রূষার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। কিন্তু আমাদের বাস্তব জীবনে আছে। সেবা ও শুশ্রূষার বিষয়টি প্রধানত রোগী বা অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে তার খোঁজখবর নিতে হয়। এই খোঁজখবর নেওয়ার সঙ্গে কিন্তু শুশ্রূষা শব্দটির অভিধান ও ব্যাকরণগত সম্পর্ক রয়েছে। শুশ্রূষা শব্দের মূল অর্থ হলো শোনার ইচ্ছা। অসুস্থ ব্যক্তির কখন কী-রকম বোধ হচ্ছে সেটা যদি শোনা না হয়, তাহলে তার সেবা করা সম্ভব হবে কীভাবে? বিশেষত রোগী তাঁর কষ্টের কথা শোনানোর জন্য সারাক্ষণ ডাকাডাকি করে। অথচ শোনার জন্য কেউ তাঁর কাছে যেতে চায় না, থাকতে চায় না। তাই এই শোনাটাই শুশ্রূষা শব্দকে সেবার সঙ্গে যুগলবন্দি করেছে।

মর্যাদা: মর্যাদা শব্দের মূল অর্থ – সীমা, ক্ষেত্রসীমা, নিয়ম ইত্যাদি। আগে মর্যাদা লঙ্ঘন বলতে জমির আইল ঠেলা বা ভাঙাও বোঝাতো। এখন মর্যাদা, ভাঙনের বদলে, কেবল হানিরই বিষয়। ফলে মর্যাদা এখন বেড়ে যাওয়া মানহানি মামলারই জোগানদাতা। মর্যাদার বিন্দুমাত্র হানি ঘটলে মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মর্যাদা নানা প্রকৃতির। এর মধ্যে আত্মমর্যাদা ও বংশমর্যাদাই প্রধান। তবে ক্ষেত্রবিশেষে আরো অনেক কিছুর সঙ্গেই মর্যাদা শব্দটি যুক্ত হতে পারে। মানুষ কোনোটিরই হানি সহ্য করতে পারে না।
মর্যাদার সহচর শব্দ হলো মান। মানমর্যাদা শব্দদ্বৈত হিসাবে উচ্চারিত হয়। মর্যাদা শব্দের বর্তমান প্রচলিত অর্থ – সম্মান, সম্ভ্রম, গৌরব, প্রতিপত্তি ইত্যাদি। এ জাতীয় অর্থ কীভাবে এল এবং নব পরিগৃহীত অর্থ কী শক্তিবলে মূল অর্থকে হটিয়ে তো দিলই, ভুলিয়েও দিল – সেটাই শব্দসংসারের এক অভেদ্য রহস্য।  (চলবে)

শুবাচে দিয়েছেন: প্রদীপ ভাদুড়ি

রহস্যময় শব্দসংসার: ওয়েবসাইট লিংক
শুবাচ গ্রুপের লিংক: www.draminbd.com
তিনে দুয়ে দশ: শেষ পর্ব ও সমগ্র শুবাচ লিংক

রহস্যময় শব্দসংসার: শুবাচ লিংক