পৃথিবীর আদি মহাকাব্য রামায়ণ ও রামায়ণ মহাকাব্যের চরিত্র
সংস্কৃত রামায়ণকে পৃথিবীর আদি মহাকাব্য বলা হয়। এতে প্রাচীন ভারতের সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম, দর্শন, শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে আদর্শিক তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে। রাম, সীতা, হনুমান, রাবণ, দশরথ, লক্ষ্মণ, দশরথ, কৈকেয়ী, ভরত, শত্রুঘœ প্রমুখ এই মহাভারতের অন্যতম চরিত্র। পিতৃসত্য ও প্রজা পালন, পতিপরায়ণতা, ভ্রাতৃভক্তি, ভগবদ্ভক্তি ইত্যাদি গুণের কারণে এ চরিত্রগুলো শাশ্বত রূপ লাভ করেছে।
বর্তমানে সুলভ বাল্মীকি রামায়ণ
বর্তমানে সুলভ বাল্মীকি রামায়ণের সংস্করণটি মোটামুটি ৫০,০০০ পঙ্ক্তি সম্বলিত। কয়েক হাজার আংশিক ও সম্পূর্ণ পুথিতে এই পাঠটি বর্তমানে সংরক্ষিত। এই পুথিগুলোর মধ্যে সর্বপ্রাচীন পুথিটি খ্রিষ্টীয় একাদশ শতকে লিখিত হয়। মূল রামায়ণের একাধিক আঞ্চলিক পাঠান্তর, সংস্করণ ও উপসংস্করণ বিদ্যমান। পুথিবিশারদ রবার্ট পি. গোল্ডম্যান এই সংস্করণগুলোকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথা: (ক) উত্তর ভারতীয় ও (খ) দক্ষিণ ভারতীয়। এই সংস্করণগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তামিল ভাষায় কম্বন কর্তৃক রচিত রামাবতারম্ (খ্রিষ্টীয় একাদশ-দ্বাদশ শতক); বাংলা ভাষায় কৃত্তিবাস ওঝা রচিত শ্রীরামপাঁচালী বা কৃত্তিবাসী রামায়ণ (খ্রিষ্টীয় পঞ্চদশ শতক) এবং হিন্দি ভাষার অবধি উপভাষায় তুলসীদাস গোস্বামী রচিত রামচরিতমানস (খ্রিষ্টীয় ষোড়শ শতক)।
রামায়ণের ধর্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব
রামায়ণের নায়ক রাম হিন্দুধর্মে একজন অন্যতম প্রধান দেবতা বিবেচিত হন। হিন্দু সংস্কার অনুযায়ী, রামায়ণ পাঠ অথবা শ্রবণে পাঠক বা শ্রোতা পাপমুক্ত হন। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, বিষ্ণু জগতের সকল জীবকে ধর্মের পথসন্ধান দিতে রাম রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আরিশা সাত্তারের মতে, রামায়ণ ও মহাভারতের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্ত হলো রাম ও কৃষ্ণের গোপন দেবত্ব ও তার ক্রমপ্রকাশ।