চতুর্দশ শতকে কৃত্তিবাস ওঝা প্রথম সংস্কৃত রামায়ণের বাংলা অনুবাদ করেন। এটি কৃত্তিবাসী রামায়ণ নামে পরিচিত। ষোড়শ শতকে আসামের কবি মাধব কন্দলী এবং শঙ্করদেব যৌথভাবে প্রাচীন অসমীয়া ভাষায় রামায়ণ রচনা করেন। সতেরো শতকে অদ্ভুত আচার্য (নিত্যানন্দ) রচিত অদ্ভুতাচার্য রামায়ণ উত্তরবঙ্গে বেশ জনপ্রিয় ছিল। তবে, কৃত্তিবাসী রামায়ণ সে স্থান দখল করে। একই শতকে আরও অনেক বাঙালি কবি রামায়ণ রচনা করেন। তন্মধ্যে দ্বিজ লক্ষ্মণ, কৈলাস বসু, ভবানী দাস, কবিচন্দ্র চক্রবর্তী, মহানন্দ চক্রবর্তী, গঙ্গারাম দত্ত ও কৃষ্ণদাস প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। ১৭৬২ খ্রিষ্টাব্দে রামানন্দ ঘোষ যে রামায়ণ রচনা করেন তার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এতে তিনি রামচন্দ্রকে বুদ্ধের অবতার ঘোষণা করেছেন। ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে বাঁকুড়ানিবাসী জগৎরাম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পুত্র রামপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় যৌথভাবে আরেকটি বাংলা রামায়ণ রচনা করেন। বাংলা ছাড়া ভারতীয় অন্যান্য ভাষায়ও রামায়ণ অনূদিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে তুলসীদাসের (১৫৩৩-১৬২৪) হিন্দী রামায়ণ (তুলসীদাসী রামায়ণ বা রামচরিত মানস) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এটি উত্তর ভারতে বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয়। মাইকেল মধুসুদন রামায়ণের অংশ-বিশেষ অবলম্বনে তাঁর বিখ্যাত মেঘনাদবধ কাব্য রচনা করেন।