রামায়ণ
রামায়ণ প্রাচীন ভারতীয় সূর্যবংশীয় রাজাদের কাহিনি অবলম্বনে মহর্ষি বাল্মীকি রচিত সংস্কৃত মহাকাব্য। রামায়ণ নামটি রাম ও অয়ন শব্দ নিয়ে গঠিত। যার অর্থ রামের যাত্রা। এটি ৭টি কা- (পর্ব) এবং ৫০০টি সর্গে বিভক্ত ২৪,০০০ শ্লোকের সমষ্টি। শ্লোকগুলি ৩২-অক্ষরযুক্ত অনুষ্টুপ ছন্দে রচিত। এটি হিন্দুশাস্ত্রের স্মৃতি বর্গের অন্তর্গত।
রামায়ণের মূল উপজীব্য
অযোধ্যার রাজা দশরথের পুত্র ও বিষ্ণুর অবতার রামচন্দ্রের জীবন-কাহিনী রামায়ণের মুখ্য বিষয়। কাব্যটি সপ্তকা- বা সাত খন্ডে বিভক্ত। আদিকাণ্ডে রামের জন্ম ও বাল্যজীবন; অযোধ্যাকাণ্ডে অযোধ্যা থেকে রামের নির্বাসন; অরণ্যকাণ্ডে রাম-লক্ষ্মণ-সীতার বনবাস ও রাবণ কর্তৃক সীতাহরণ; কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ডে বানররাজ সুগ্রীবের সঙ্গে রামের মিত্রতা; সুন্দরকাণ্ডে রামের সসৈন্যে লঙ্কা গমন; লঙ্কাকাণ্ডে রাম-রাবণের যুদ্ধ, যুদ্ধে রাবণের পরাজয় ও সবংশে মৃত্যু, রাম কর্তৃক সীতা উদ্ধার ও রাবণভ্রাতা বিভীষণকে লঙ্কার রাজা করে সদলে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন; এবং উত্তরকাণ্ডে রামচন্দ্র কর্তৃক সীতাবিসর্জন, লব-কুশের জন্ম, রাম-সীতার পুনর্মিলন এবং মৃত্যু-বর্ণিত হয়েছে। এই সপ্তকাণ্ডের প্রতিটি একাধিক সর্গ বা অধ্যায়ে বিভক্ত।
রচনাকাল
হিন্দুদের বিশ্বাস, ভারতের আদিকবি রামের সামসময়িক তথা এই মহাকাব্যের অন্যতম চরিত্র ঋষি বাল্মীকি স্বয়ং এই মহাকাব্য রচনা করেছেন। সংস্কৃত ভাষায় রচিত রামায়ণের মূল পাঠটি বাল্মীকি রামায়ণ নামে পরিচিত। এই গ্রন্থটি মহাভারতের পূর্বে রচিত। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, হিন্দু কালপঞ্জিতে বর্ণিত যুগপর্যায়ের দ্বিতীয় যুগ ত্রেতায় এই মহাকাব্য রচিত হয়।