ড. মোহাম্মদ আমীন
রাঢ়: বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি বড়ো অংশ প্রাচীন বাংলার জনপদ রাঢ়-এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। জৈন ঘটনাপঞ্জি আচারঙ্গসূত্রে সর্বপ্রথম রাঢ়/রারহ/লাঢ়/লার প্রভৃতি নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেখানে বর্ণিত আছে, খ্রি.পূর্ব ছয় শতকে মহাবীর ধর্ম প্রচারকালে বজ্জভূমি ও শুভ্যভূমির অন্তর্ভুক্ত পথহীন লাঢ় দেশ পরিভ্রমণ করেন। সে সময় জনপদটি ছিল ‘দুর্গম ও নৈরাজ্যময়’ এবং সেখানকার অধিবাসীরা মহাবীরের প্রতি রূঢ় আচরণ করে। দীপবংশ ও মহাবংশে এরূপ জনশ্রুতির উল্লেখ রয়েছে, বিজয় শ্রীলংকা আবাদ করে সেখানে জনবসতি গড়ে তুলেছিলেন এবং এই বিজয় ছিলেন ‘লাল’-এর অন্তর্গত সিংহপুরের অধিবাসী। এই ‘লাল’ রাঢ়ের সঙ্গে শনাক্তীকৃত। মথুরায় প্রাপ্ত একটি শিলালিপিতে লিপিবদ্ধ আকারে সম্ভবত সর্বপ্রথম রাঢ়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, যাতে ‘রাঢ়’ রাজ্যের অধিবাসী এক জৈন সন্ন্যাসীর অনুরোধে একটি জৈন মূর্তি নির্মাণের উল্লেখ আছে। বল্লালসেনের নৈহাটী তাম্রশাসনে রাঢ়কে সেন রাজাদের পিতৃভূমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দিগি¦জয়প্রকাশ-এ উল্লিখিত একটি জনশ্রুতিতে দামোদর নদের উত্তরে ও গৌড়ে দক্ষিণে রাঢ়ের অবস্থান নির্দেশ করা হয়েছে। তবকত-ই-নাসিরীর বর্ণনায়ও গঙ্গার দক্ষিণে রাড়ের অবস্থান নির্দেশিত হয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয়, পশ্চিম বাংলার দক্ষিণাঞ্চল ও বর্ধমান জেলা নিয়ে রাঢ় গঠিত ছিল। এর অন্তর্গত তাম্রলিপ্তি ছিল তৎকালীন বিখ্যাত নৌবন্দর ও বাণিজ্য এলাকা।
বাংলার প্রাচীন বাংলা কয়েটি জনপদে বিভক্ত ছিল। জনপদগুলোর নাম ও বর্ণনা নিচে দেওয়া হল। ক্লিক করে জনপদগুলোর সংক্ষিপ্ত, কিন্তু তথ্যবহুল বিবরণ জেনে নিতে পারেন।