ড. মোহাম্মদ আমীন
রহিমের বল। রহিমের কলম। রহিমের বাড়ি। রহিমের গাড়ি। রহিমের জামা। রহিমের টাকা। রহিমের সম্পত্তি। রহিমের গোরু। এই বাক্যগুলো দিয়ে বোঝায়— বল, কলম, বাড়ি, গাড়ি, জামা, টাকা, সম্পত্তি ও গোরুর মালিক রহিম, কিংবা বস্তুগুলো রহিমের মালিকাধীন। অধিকন্তু এও বোঝায় যে, রহিম ওই বস্তুসমূহের ইচ্ছানুযায়ী ব্যবস্থাপনার অধিকার আইনগতভাবে সংরক্ষণ করে। অর্থাৎ বস্তু হলে ‘র-বিভক্তি’ সাধারণভাবে বস্তুর মালিকানা নির্দেশ করে। এখানে বস্তু বলতে প্রাণীও প্রকাশ করছে। তবে কিছু কিছু বস্তুর ক্ষেত্রে সম্পর্কটি মালিকানার নাও হতে পারে। যেমন: রহিমের বই। এই বাক্যটি দিয়ে কেবল রহিমের মালিকানাধীন ‘বই’ বোঝায় না। কেননা, এমনও হতে পারে, ওই বইটির লেখক রহিম, কিন্তু মালিক অন্যজন। যেমন: আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি বই কিনেছি। বলা যায়— বইটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এর মানে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বইটির মালিক নন। বইটির মালিক আমি। অতএব ‘র-বিভক্তি’ দিয়ে লেখক, আবিষ্কারক প্রভৃতিও বোঝায়।
রহিমের বাবা, রহিমের চাচা, রহিমের বউ, রহিমের ভাই। রহিমের বোন। রহিমের কাকা, রহিমের নানা। রহিমের মামা। এই বাক্যগুলো প্রকাশ করে যে, রহিম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে বাবা, চাচা, বউ, ভাই, বোন, কাকা, নানা প্রভৃতি পারিবারিক বা আইনগত সাম্বোধিক সম্পর্কে সম্পর্কিত। সম্বোধিত ব্যক্তিবর্গ বস্তু নয়। তাই আইন অনুযায়ী রহিম এদের মালিক নয়। বিষয়টি দ্বারা কেবল সম্পর্ক প্রকাশ করে। তাই রহিম এই ব্যক্তিবর্গের ব্যবস্থাপনা আইনগতভাবে ইচ্ছানুযায়ী করার অধিকার সংরক্ষণ করে না। সংগতকারণে, এখনে ‘র-বিভক্তি’ মালিকানা বা নিরংকুশ অধিকার প্রতিষ্ঠা করে না। তবে “রহিমের ক্রীতদাস।” এই বাক্য প্রকাশ করে— ক্রীতদাসের ওপর রহিমের সম্পর্ক মালিকানার। তাই তার ওপর রহিম ইচ্ছানুযায়ী অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। প্রসঙ্গত, এখন সভ্যসমাজে ক্রীতদাস প্রথা নেই।
রহিমের গ্রাম, রহিমের দেশ, রহিমের জেলা। রহিমের পাড়া। এই বাক্যগুলো দিয়ে বর্ণিত স্থানসমূহ রহিমের মালিকানাধীন— এমনটি বোঝায় না। এই বাক্যসমূহ দিয়ে সাধারণভাবে এমন স্থান বোঝায়— যেখানে রহিম বসবাস করে। আবার এটিও বোঝায়— রহিম ওই স্থানসমূহে বাস করে না, কিন্তু স্থানসমূহের নিয়ন্ত্রক।
বিসিএস প্রিলি থেকে ভাইভা কৃতকার্য কৌশল
ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা বইয়ের তালিকা
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক