লিয়াকত চৌধুরী
শুশ্রূষা>> শ্রু ধাতুর অর্থ শোনা। শ্রু+সন= শুশ্রুষা হল শোনবার ইচ্ছা যে সেবা করতে চায়, সে রুগির কথা শোনবার জন্য কান খাড়া রাখবে, এমন প্রত্যাশা থেকেই শুশ্রুষা হল সেবা।
সাবোতাজ> ফরাসি sabot শব্দের অর্থ কাঠের জুতো।শব্দটি আরবি sabbat থেকে এসেছে, যার অর্থ জুতো বা sandal। ফরাসি চাষিরা দারিদ্র্যের কারণে চামড়ার জুতো ব্যবহার করত না।এই জুতো পরে কাজ করাকে খারাপ কাজ মনে করা হত। এভাবে এল ফরাসি ক্রিয়াপদ saboter=to work badly। জমিদারের জমি কাঠের জুতো পরে নষ্ট করে দেওয়ার অনুষঙ্গে এল Sabotage কথাটি। এরপর শব্দটির অর্থের ব্যাপ্তি ঘটেছে।
সিন্ধু> সং,- শব্দটির উৎপত্তি স্যন্দ্ ধাতু থেকে, যার অর্থ ক্ষরণ করা। সিন্ধু সমুদ্রও বটে নদীও বটে। সিন্ধু ফারসিতে হল হিন্দু, গ্রিক রসনায় Indus। India বা হিন্দুস্হান শব্দ সিন্ধুরই অপভ্রংশজাত।প্রসঙ্গত হিন্দু আসলে ভৌগলিক শব্দ, ধর্মের নাম হিসাবে হিন্দু অনেক অর্বাচীন প্রয়োগ।
স্লোগান>শব্দটি আমাদের ঢের পরিচিত।এর উৎপত্তি প্রাচীন স্কটল্যান্ডের একটি জনগোষ্ঠীর যুদ্ধ ঘোষণার ধ্বনি হিসেবে।প্রাচীন Gaelic ভাষার slauagh- ghairm এর অর্থ ছিল যুদ্ধ হুংকার Battle cry। পরে স্কটিশ ভাষায় হয় Slogorn । বর্তমানে স্লোগান শব্দটি আমাদের আগেই বলেছি খুব কাছের শব্দ।
সেনেট > শব্দটির বুৎপত্তি লাতিন senex থেকে – যার অর্থ বৃদ্ধ:an old man।রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে পক্ককেশদের ছিল প্রাধান্য।তাই সেনেট হল বৃদ্ধদের সভা। এই একই শব্দ থেকে senile(স্মৃতিভ্রষ্ট বৃদ্ধ) শব্দটি এলে বৃদ্ধদের কদর এল কমে।
বানর >এই শব্দের একাধিক সম্ভাব্য বুৎপত্তি আছে। একটি হল:বন-রম্ (ধাতু)+ অ =বানর।যে বনে ক্রীড়া করে, সে হল বানর। অন্য সম্ভাবনা বা – নর অর্থাৎ নরের সদৃশ বা কুৎসিত নর। বানর থেকে বাঁদর (গালাগালিতে জোর পাওয়া যায়)শব্দের উদ্ভব।
বেকুব > শব্দটি কিভাবে এলো? আরবী অকুফ (ওকুফ) শব্দের অর্থ বুদ্ধি। এর সাথে ফারসি বে উপসর্গ যুক্ত হয়ে বেওকুফ, সেখান থেকেই এলো বেকুব।
সূত্র : লিয়াকত চৌধুরী, শুবাচ; বিস্তারিত : শুদ্ধ বানান চর্চা
শব্দজ্ঞানের গভীরতা বাড়ানোর জন্য বিপরীতার্থক শব্দের ব্যবহার অপরিহার্য ।মজার বিষয় হলো- মূল শব্দ তৎসম, তদ্ভব, দেশি বা বিদেশি হলে অথবা বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়াপদ হলে, বিপরীত শব্দও তাই হবে
দেখুন : বিসিএস সাধারণ জ্ঞান ও বাংলা বানান