নাসিক্য বর্ণ ঙ ঞ ণ ন ম-এর ব্যবহার
ড. মোহাম্মদ আমীন
সাধু ভাষায় ‘ঙ্গ’ চলিত ভাষায় ‘ঙ’: শব্দের বানানে কখন ঙ এবং কখন ‘ঙ্গ’ হবে
‘ঙ’ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ, কিন্তু /ঙ্গ (ঙ্+গ)/ একটি যুক্তবর্ণ। উচ্চারণের দিক থেকেও উভয়ের বিস্তর ব্যবধান লক্ষণীয়। /ঙ/ বর্ণের উচ্চারণ অবিকল অনুস্বারের (ং) মতো কিন্তু /ঙ্গ/ এর উচ্চারণ ‘উঁওয়-গ’-এর মতো। কোনো শব্দের বানানে যদি গ-ধ্বনি স্পষ্টভাবে না ফুটে তা হলে ওখানে ‘ঙ’ দেওয়াই সঙ্গত। যেমন:
সাধু ভাষায় ব্যবহৃত কিছু শব্দের ‘ঙ্গ’- এর স্থলে চলিত ভাষায় কোমল রূপ হিসেবে ‘ঙ’ আসে। যেমন: আঙ্গুর> আঙুর; কাঙ্গাল> কাঙাল। তেমনি, আঙিনা, আঙুল, গাঙ, গোঙানি, ঘুঙুর, ঘেঙানি, চঙর, চাঙারি, চোঙ, চোঙা, জাঙাল, ঝিঙে, টঙ, টাঙা. টাঙানো, টাঙি, টুঙি, ঠোঙা, ঠ্যাঙানো, ঠ্যাঙাড়ে, ডাঙা, ডিঙা, ডিঙানো, ডিঙি, ডোঙা, ঢ্যাঙা, ফিঙে, বাঙালি, ভাঙ, ভাঙন, ভাঙা, ভাঙানো, ভেঙানি, ভ্যাঙানো, মাছরাঙা, রঙ, রঙিন, রাঙা, রাঙামাটি, লাঙল, শিঙা, হাঙর, হিঙ ইত্যাদি।
ডিঙি, ডোঙা, ঠোঙা, ট্যাঙা, নোঙর, রাঙা, কাঙাল, বাঙাল, বাঙালি প্রভৃতি শব্দের বানানে এক সময় /ঙ/ এর স্থলে /ঙ্গ/ দেওয়া হতো। এখন দেওয়া হয় না। কারণ, এখন এ সকল শব্দের উচ্চারণ পাল্টে হয়েছে যথাক্রমে ডিংই, ডোংআ, ঠোংআ, ট্যাংআ, নোংঅর্, রাংআ, কাংআল্, বাংআল, বাংআলি।
এবার দেখি নাসিক্য বর্ণের ব্যবহারবিধি
ক বর্গের সঙ্গে ঙ; যেমন: অঙ্ক, শঙ্খ, বঙ্গ, সঙ্ঘ।

চ বর্গের সঙ্গে ঞ; যমন: অঞ্চল, বাঞ্ছা, অজ্ঞান, ঝঞ্ঝা।
ট বর্গের সঙ্গে ণ; যেমন: ঘণ্টা, কণ্ঠ, ভণ্ড বণ্টন।
ত বর্গের সঙ্গে ন; যেমন: অন্ত, পন্থা, বন্দি, রন্ধন।
প বর্গের সঙ্গে ম যোগ হবে; যেমন: কম্পন, লম্ফ, গম্ভীর।
ঙ- ক বর্গ- অঙ্কন, রাঙ্গা, শৃঙ্খলা
ঞ- চ বর্গ-অঞ্চল,পাঞ্জাবি, লাঞ্ছনা।
ণ-ট বর্গ-কণ্ঠ,কন্টক,কাণ্ড।
ন-ত বর্গ- অন্তর, আনন্দ, মন্থর।
ম-প বর্গ- অবলম্বন, কম্পন, গম্ভীর।
বাংলা বানান কোথায কি এবং কেন লিখবেন/১
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক
শুদ্ধ বানান চর্চা প্রমিত বাংলা বানান বিধি : বানান শেখার বই
প্রায়শ ভুল হয় এমন কিছু শব্দের বানান/২
প্রায়শ ভুল হয় এমন কিছু শব্দের বানান/৩
প্রায়শ ভুল হয় এমন কিছু শব্দের বানান/৪