ড. মোহাম্মদ আমীন
শুদ্ধ ভুল; ভুল শুদ্ধ: দুষ্ট বানান, কোনটি শুদ্ধ কোনটি ভুল: ভুল বানান শুদ্ধীকরণ, বানান বিপর্যয়
নিচের শব্দগুলো দেখুন। সমোচ্চরণের কারণে বানানে ভুল হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। একবার দেখে নিন। যে শব্দগুলোর ওপর কাটা দাগ আছে সেগুলো ভুল। বাকিটি শুদ্ধ।
দুর্নীতি না দূর্নীতি,
দুর্বল না দূর্বল,
দুঃসাহস না দূঃসাহস,
দুর্নিবার না দূর্নিবার,
ধুলো না ধূলো,
ধুলি না ধূলি,
সহচার্য না সাহচর্য,
ভুল মা ভূল,
উচিত না উচিৎ,
অজ্ঞানতাবশত না অজ্ঞানতাবসত,
পরীক্ষা না পরিক্ষা,
জায়গা না যায়গা,
তৈরি না তৈরী,
চাকুরি না চাকুরী,
তরকারি না তরকারী,
দরকারি না দরকারী,
সরকারি না সরকারী,
দায়ী না দায়ি,
দাবি না দাবী,
চীন না চিন (দেশ),[ চীন তৎসম শব্দ]
আয়ত্ত না আয়ত্ত্ব,
চত্ত্বর না চত্বর,
সলুশ্যন না সলিউশন,
উপলক্ষ্য না উপলক্ষ,
সিকিউরিটি না সিক্যুরিটি,
ফুফু না ফুপু,
ভাবি না ভাবী (Sister-In-Law),
নতুন না নূতন, (দুটোই শুদ্ধ
মুখ্যমন্ত্রী না মূখ্যমন্ত্রী
‘ওষুধ’ নাকি ‘ঔষধ’ দুটোই শুদ্ধ
নিচে কয়েকটি দুষ্ট শব্দের শুদ্ধ বানান দেওয়া হলো
নিচে কিছু দুষ্ট শব্দের শুদ্ধ বানান দেওয়া হলো। কয়েক বার পড়লে মনে রাখা কঠিন হবে না।
অপাঙ্ক্তেয় / অলঙ্ঘ্য / আকাঙ্ক্ষা / আর্দ্র/
উজ্জ্বল / উত্ত্যক্ত / কৃচ্ছ্র / ক্বচিৎ / ক্রূর
ক্ষুন্নিবৃত্তি / জ্যোৎস্না /জোছনা/ জ্যোতিষ্ক / তৎক্ষণাৎ
তদ্ব্যতীত / দুর্নিরীক্ষ্য / দ্ব্যর্থ / দ্যূতক্রীড়া
দারিদ্র্য / দৌরাত্ম্য / ন্যুব্জ /ন্যূন
পঙ্ক্তি / পরাঙ্মুখ / পার্শ্ব / প্রতিদ্বন্দ্বিতা
প্রতিদ্বন্দ্বী / গার্হস্থ্য
কর্ত্রী।
বানান বিপর্যয়
যিশুখ্রিস্ট হাওয়া।
রাতের মধ্যে এতদিনের শুদ্ধ ও প্রমিত খ্রিস্টাব্দ অপ্রমিত হয়ে গেল। খ্রিস্টানকেও তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সবাই এখন খ্রিষ্টান। নিয়মানুযায়ী বিদেশি শব্দে ‘মুর্ধন্য-ষ’ হয় না; তো এরা কীভাবে বিদেশি হয়েও ‘মূর্ধন্য-ষ’ নিয়ে নিল? অতৎসম শব্দটি রাতারাতি তৎসম হয়ে গেল বেকার লোকটির মন্ত্রীর হওয়ার মতো অবলীলায়।
‘ক্রিয়া’রা কেন জানি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির অনুসরণে ‘নি’ পদের সঙ্গে সেঁটে বসতে শুরু করেছে। বেচারা ‘ব্যবহারিক’ বহুদিন পর আ-কার পেয়ে নাচতে নাচতে ‘ব্যাবহারিক’ হয়ে গেল। ‘বাংলা একাডেমী’ও নেই বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে তাকে। সে এখন ‘একাডেমি’। ‘সুপ্রীম কোর্ট’ও ‘সুপ্রীম’ ছাড়েনি, যদিও আমার আপনার সুপ্রীম, এখন সুপ্রিম। কারণ, বিদেশে শব্দের বানানে নাকি /ঈ.ঊ/ চলে না।তাহলে কী-বোর্ডে কেন ঈ-কার?
সরু গরু ও-কার পেয়ে মোটা গোরু। অনেক চেষ্টা করেও পাশের সরু গলিটা সোরু হতে পারল না। পটলের পেটটা মোটা হয়ে পটোল। পটল, পটল তুলেছে পটোলে। কেউ এখন আর পটল তুলতে পারবেন না, তুলতে হবে ‘পটোল’। পটল যদি পটোল হয় তো পাশের দিঘির কমল কী দোষ করল? তারও তো ইচ্ছে করে ও-কার নিয়ে একটু মোটাতাজা হতে!
ছোট ভাইটাও ‘ও-কার’ পেয়ে নাদুস-নদুস— ছোটো। আদরের ছোট্ট বোনটার অবস্থা আগের মতোই করুণ। এত চেষ্টা করেও সে ছোট্টো হতে পারল না। বিয়ে হবে কীভাবে?
সূত্র: ব্যাবহারিক প্রমিত বাংলা বানান সমগ্র, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.
প্রয়োজনীয় লিংক
পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি. ড. মোহাম্মদ আমীন প্রকাশক: পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.।
Pretty! This was a really wonderful post. Thank you for your provided information.