এ ‘স্যার’ সম্মানের জন্য দেওয়া হয় না, বরং অসম্মানজনকভাবে গোলামি করার জন্য দেওয়া হয়। যারা ব্রিটিশের গোলামিতে যত নত হয় তারা তত তাড়াতাড়ি ‘স্যার’ মানে ‘ষাঁড়’ বা ‘সার’ উপাধিতে ভূষিত হয়। উপনিবেশে আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত দেখুন, বুঝতে পারবেন।
১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জ, স্ক্রনেলশন্ নামের এক যুদ্ধ-জাহাজের একটি কুকুরকে স্যার উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটি সত্য। এরপর কুকুরটির নাম হয় স্যার উইলিয়াম।
বিডিনিউজ২৪ ডটকমে জনাব আশরাফুল আলম লিখেছেন,“ব্র্যাক চেয়ারম্যান ফজলে হাসান আবেদ আমাদের গর্ব নিঃসন্দেহে। তবে নামের আগে স্যার উপাধি কতটা সন্মানজনক তা ভাববার বিষয়। যেখানে তিনি এই উপাধি কোনোভাবেই ব্যবহার করতে পারেন না। ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু এবং অসম্মানজনক। কারণ যতবার ব্রিটিশরা এই ধরনের খবর দেখছে ততবার আমাদের নিয়ে উপহাস করছে। মনে মনে হলেও।
আসুন জেনে নিই, স্যার উপাধি কীভাবে পায় আর এর ব্যবহার কীভাবে বা কারা করতে পারেন। ব্রিটিশ সরকার ১৩৪৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য নাইট উপাধি ঘোষণা করে। প্রথমে সেনাবহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ক্রমে এই উপাধি অন্যান্য সাধারণ মানুষের মাঝেও বিতরণ শুরু হয়। পাঁচটি ভিন্ন উপাধির মাধ্যমে স্যার শব্দটার ব্যাবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। অর্থাৎ আপনি যদি নাইট উপাথি পান তবে আপনার নামের আগে ‘স্যার’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে ব্রিটিশ নাগরিক হতে হবে। আপনি যদি অন্য-কোনো দেশের নাগরিক হন এবং নাইট উপাধিতে ভূষিত হন তবে আপনি ‘স্যার’ শব্দটি নামের আগে ব্যাবহার করতে পারবেন না। তবে চাইলে আপনি কে বি ই ইংরেজির এই তিনটি শব্দ ব্যবহার করতে পারেন।”
ব্রিটিশ রানি প্রদত্ত ‘স্যার’ অর্থ— বলদ এবং এসব বলদের কাজ হলো হালটানা। এই বলদদের দিয়ে প্রভু ব্রিটিশেশ্বর ঔপনিবেশিক আমলে, এমনকি এখনও তাদের স্বার্থে হাল টানিয়ে নিচ্ছে, চতুষ্পদ জন্তর মতো। ব্রিটিশ প্রভুর বলদ উপাধি পেয়ে উপাধিধারী মানুষগুলো সত্যি সত্যি বলদের মতো মোটাতাজা হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়। এটি অনেকটা কোরবানির গোরু মোটাতাজা করার মতো— মোটা হলে বিক্রি বা জবাই। কী মজা! কেবল দু-অক্ষরের একটি শব্দ দিলেই হলো।
এই ‘স্যার’ উপাধি পেলে বাঙালি মনে করে ইশ্বরের তাজ পেয়েছে এবং অন্যরা মনে করে এমন ইশ্বরতাজপ্রাপ্ত বাঙালি. প্রভুর খাস বান্দা হয়ে গেছে।সবাই ব্রিটিশ-বলদকে পুজো করা শুরু করে। ব্রিটিশ প্রভু হাসে— বলদদের কাণ্ড দেখে। কী সহজ কৌশলে ব্রিটিশ, তার উপনিবেশের বড়ো শিংওয়ালা ষাঁড়গুলোকে ‘স্যার’ নামের রশি দিয়ে বেঁধে বলদ বানিয়ে হাল টানিয়ে নিত এবং এখনো নিচ্ছে।
————————————–