ড. মোহাম্মদ আমীন
সম্+গীত = সংগীত কিন্তু সম্+বোধন =সংবোধন নয় কেন?
কারণ, ম্ এর পর বর্গীয়-ব থাকলে ওই ম্ অবিকল থাকে, অনুস্বার (ং) হয় না। যেমন : সম্বন্ধ, সম্বোধি, সম্বন্ধী, সম্বরা, সম্বল, সম্বাধ, সম্বুদ্ধ, সম্বোধন প্রভৃতি। অন্যদিকে, ম এর পর অন্তঃস্থ-ব থাকলে ম পরিবর্তিত হয়ে অনুস্বার (ং) হয়ে যায়। যেমন : কিংবদন্তি, কিংবা, সংবর্ধনা, সংবাদ প্রভৃতি। কারণ অন্তঃস্থ-ব নিজের স্বাধীন সত্তা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য একটি অনস্বার তার সামনে নিয়ে আসে।
এখন কেউ যদি প্রশ্ন করেন, বর্গীয়-ব এবং অন্তঃস্থ-ব কীভাবে বোঝা যাবে? হায়াৎ মামুদ বললেন, মুখস্থ করা ছাড়া বোঝার কোনো উপায় নেই।
হ য ব র ল বাগধারাটির বুৎপত্তি
হ য ব র ল বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত একটি বাগ্ধারা। এর অর্থ বিশৃঙ্খল, অব্যবস্থা। বাংলা অক্ষরসমূহ নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে সজ্জিত। শিশুদের যখন বর্ণপরিচয় শেখানো হয় তখন বর্ণগুলো তারা চিনে শিখেছে, না কি শুধু মুখস্থ করেছে তা পরীক্ষার জন্য এলোমেলোভাবে লিখে পরীক্ষা করা হয়। যেমন, য র ল ব শ এর ক্রম ভেঙ্গে লেখা হতে পারে হ য ব র ল। বর্ণপরিচয় যাচাইয়ের জন্য বর্ণক্রমের এ স্থানচ্যুতি বা বিশৃঙ্খল সজ্জা থেকে বাগধারাটির উৎপত্তি।
ব-ফলা ও য-ফলা যখন ভেঙে লিখব
‘ব’ এবং ‘য’ এর উচ্চারণ যখন পৃথকভাবে যথাক্রমে ‘ব্’ এবং ‘জ্’ রূপে করা হয়, তখন ব-ফলা এবং য-ফলার পরিবর্তে ‘ব’ ও ‘য’ আলাদা ভেঙে লেখাই উচিত। অন্যথায় উচ্চারণ বিভ্রাটের আশঙ্কা থেকে যায়। এজন্য লিখুন : উদ্বাস্তু, উদ্বিগ্ন, উদ্বেগ, উদ্বোধন প্রভৃতি। অন্যদিকে, ‘উদ্যোগ’ যদি উদ্জোগ উচ্চারিত হয়। সেক্ষেত্রে ‘উদ্যোগ’ লেখাই উচিত। ব-ফলা ও য-ফলার পৃথক ‘ব’ এবং ‘য’ উচ্চারণ না-থাকলে ব-ফলা ও য-ফলা অবিকল থাকবে। যেমন : বিদ্বান, উদ্যম, উদ্যান, স্বামী প্রভৃতি।
শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ) গ্রুপের নীতিমালা ও যযাতি অনুমোদন
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১