Jihan RH
এক ধরনের শব্দ আছে, কথার পূর্বে বসে সমষ্টি বোঝায়, যেমন ‘সব’: সব চৌকি, সব জন্তু, সব মানুষ। কিন্তু এইখানে এই শব্দ কেবল বহুবচন বোঝায় না, সঙ্গে সঙ্গে একটা ঝোঁক দেয়। সব চৌকি সরিয়ে দাও, অর্থাৎ একটাও বাকি রেখো না। সব ভিখিরিই বাঙালি, অর্থাৎ নির্বিশেষে বাঙালি। ‘সব’ প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে ‘গুলো’ প্রয়োগটা যোগ দিতে চায়, যেমন: সব চৌকিগুলোই ভাঙা, সব
ভিখিরিগুলোই চেঁচাচ্ছে। এখানে সব বোঝাচ্ছে একান্ততা, আর ‘গুলো’ বোঝাচ্ছে বহুবচন। বহুবচনে এক সময়ে ‘সব’ ব্যবহৃত হত। কবিতায় এখনো দেখা যায়, যেমন: পাখিসব তোমাসব ইত্যাদি। আমরা বলি: কাফ্রিরা সব কালো। বহুবচনের রা বিভক্তির সঙ্গে জোড়া লাগে ‘সব’ শব্দ: এরা সব গেল কোথায়। শুধু ‘এরা গেল কোথায়’ বললেই চলে, কিন্তু ‘সব’ শব্দের দ্বারা সমষ্টির উপর জোর দেয়া হয়ছে। এই ‘সব’ শব্দ একবচনকে বহুবচন করে না, বহুবচনকে সুনির্দিষ্ট করে।” (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলাভাষা-পরিচয়)

—————————————————————-