ড. মোহাম্মদ আমীন
বিশ্বের বিভিন্ন শ্বরবিজ্ঞান, মরমী গীতি, আধ্যাত্মিক ও আত্মতাত্ত্বিক প্রভৃতি শাস্ত্রে তেরো (১৩) সংখ্যাটির বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। যেমন: তেরো অক্ষর, তেরো ঋক, তেরো দুয়ার, তেরো নদী, তেরো পর্ব, তেরো মন্ত্র, তেরো শীল, তেরো রাত্র, তেরো ষাঁড় প্রভৃতি। একইভাবে দেখা যায় সাত (৭) সংখ্যার ব্যবহার ও প্রচলন আধিক্য। যেমন: সাত সাগর, সাত জনম, সাত সকাল, সাত পুরুষ ইত্যাদি। বলন কাঁইজির “আত্মতত্ত্বভেদ (পৌরাণিক সংখ্যা, অষ্টম খণ্ড)” গ্রন্থে এসব বিষয় বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এবার দেখি সাত সাগর আর তের নদীর নাম এবং সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত। জেনে নিই, কোথায় থাকে: স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা —।
শ্বরবিজ্ঞান অনুযায়ী মানবদেহে মোট ১৩টি জলধারা রয়েছে। এই তেরোটি জলধারাকে বাংলায় একত্রে ‘তেরো নদী’ বলা হয়। আরবিতে বলা হয়— ‘ছালাসাতা আশারিল আনহার’। এছাড়া মানবদেহে রয়েছে সাতটি বিশেষ বিশাল ও অপরিমেয় প্রবাহ। যে প্রবাহ দিয়ে মানব ও মানবদেহ প্রভূত বিষয় অর্জন-বর্জন, দর্শন-বিদর্শন প্রভৃতি কার্যকলাপ সম্পাদন করতে সক্ষম। মানবদেহের অন্যান্য প্রবাহ থেকে তুলনামূলকভাবে বিশাল বিবেচনায় এই সাত প্রবাহকে একত্রে সাত সাগর বলা হয়। মূলত মানবদেহের এই সাত সাগর ও তেরো নদী থেকে মরমী বা আধ্যাত্মিক জগতে বহুল ব্যবহৃত সাত (৭) ও তেরো (১৩) সংখ্যার গূঢ় গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই সাত (৭) সাগর ও তেরো (১৩) নদীর সাত ও তেরো থেকে সৃষ্টি হয়েছে অনেক গান, প্রবাদ, প্রবচন এবং সৃষ্টিতত্ত্বের নানা ব্যাখ্যা আর বিশ্লেষণ। এবার সাত সাগর আর তেরো নদীর নামগুলো জেনে নেওয়া যাক।
মানবদেহের সাত সাগর হলো (১) চক্ষু, (২) কর্ণ, (৩) নাসিকা, (৪) জিহ্বা, (৫) ত্বক, (৬) মন ও (৭) জ্ঞান। মানুষের চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা ও জিহ্বা দিয়ে পাঁচ প্রকার জল প্রবাহিত হয়। সাগরের যেমন তল দেখা যায় না তেমনি মন আর জ্ঞানের তলও দেখা যায় না। এজন্য শ্বরবিজ্ঞানে মন ও জ্ঞানকে সাগরের সঙ্গে তুলনা করা হয়। বাংলাসাহিত্যে আরও সাত সাগরের সন্ধান পাওয়া যায়। যেমন : বিদ্যা সাগর, বুদ্ধি সাগর, কাম সাগর, প্রেম সারগ, ভাব সাগর, কর্ষণ সাগর ও দর্শন সাগর। মানবদেহে প্রবাহিত তেরোটি জলধারা হলো : (১) অশ্রু, (২) শিকনি, (৩) বিষ্ঠা, (৪) মূত্র, (৫) ঘর্ম, (৬) কফ, (৭) রক্ত, (৮) রজ, (৯) লালা, (১০) শুক্র, (১১) দুগ্ধ, (১২) সুধা, (১৩) মধু। সাত সাগর আর তের নদী
বিসিএস প্রিলি থেকে ভাইভা কৃতকার্য কৌশল