সিন্ধু সভ্যতার নগরী
সিন্ধু সভ্যতার যেসব নগরীর সন্ধান পাওয়া গেছে, তা হচ্ছে রাজস্থানের কালিবাঙ্গান, পাকিস্তানের হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো । এই তিনটি নগরী এবং আরও প্রায় দুশ ছোট বড়ো শহরের এক বিশাল নগর সভ্যতা পূর্বে ঊর্ধ্ব গঙ্গা এবং দক্ষিণে বর্তমান মুম্বাই শহর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সিন্ধু সভ্যতা আকারে ছিল তৎকালীন প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ।
ব্রোঞ্জ যুগ
৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে সিন্ধু সভ্যতার উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রোঞ্জ যুগের সূত্রপাত ঘটে। এই সভ্যতার কেন্দ্রভূমি ছিল সিন্ধু নদ ও তার উপনদী বিধৌত অববাহিকা অঞ্চল। এই সভ্যতার বিস্তার ঘটে ঘগ্গর-হাকরা নদী উপত্যকা, গঙ্গা-যমুনা দোয়াব, গুজরাট,এবং উত্তর আফগানিস্তান পর্যন্ত।
সিন্ধু সভ্যতার আধূনিক শহর ও মেসোপটোমিয়া
সিন্ধু সভ্যতার উন্মেষ ঘটে আধুনিক ভারতের গুজরাট, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও রাজস্থান এবং পাকিস্তানের সিন্ধু, পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তন প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ঐতিহাসিকভাবে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার অন্তর্গত এই সভ্যতা ছিল মেসোপটেমিয়া ও প্রাচীন মিশরের মতো পৃথিবীর আদিতম নগরাঞ্চলীয় সভ্যতাগুলির অন্যতম। হরপ্পাবাসী হিসেবে পরিচিত প্রাচীন সিন্ধু নদ উপত্যকার অধিবাসীরা ধাতুবিদ্যার কিছু নতুন কৌশল আয়ত্ত্ব করে তামা, ব্রোঞ্জ, সিসা ও টিন উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছিল।
নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা
সিন্ধু সভ্যতা ২৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সমযয় ভারতীয় উপমহাদেশে নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার সূচনা ঘটে। আধুনিক ভারতের ধোলাবীরা, কালিবঙ্গান, রুপার, রাখিগড়ি, লোথাল ও পাকিস্তানের হরপ্পা, গানেরিওয়ালা, মহেঞ্জোদাড়োতে প্রাচীন এই সভ্যতার বিভিন্ন নগরকেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই সভ্যতার বিশেষত্ব ছিল ইষ্টকনির্মিত শহর, পথপার্শ্ববর্তী নিকাশি ব্যবস্থা ও বহুতল আবাসন।