ড. মোহাম্মদ আমীন
মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলি একদিন বিমানে করে লন্ডন যাচ্ছিলেন। আবহাওয়া ভালো না। উড়োজাহাজ ছাড়ার আগে একজন বিমানবালা এসে মোহাম্মদ আলিকে সিল্ট বেল্ট বেঁধে নেওয়ার অনুরোধ করলেন।
মুহাম্মদ আলি বললেন, আমি সুপারম্যান। আমার সিল্ট বেল্ট বাঁধার কোনো প্রয়োজন নেই।
বিমানবালা বললেন, তাহলে তো স্যার সুপারম্যানদের বিমানে চড়ারও প্রয়োজন নেই।
মুহাম্মদ আলি বিমানবালার কথা শুনে তাড়াতাড়ি সিট বেল্ট বেঁধে নিলেন।
সূত্র: বিখ্যাতদের কৌতুক হাস্যরস ও প্রজ্ঞাযশ, ড. মোহাম্মদ আমীন
——————————————————-
মুহাম্মদ আলির (Muhammad Ali) জন্ম নাম ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র (১৭ই জানুয়ারি ১৯৪২ –৩রা জুন ২০১৬); মার্কিন পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা। ইংরেজি বানান Cassius Marcellus Clay, Jr। তাঁকে ক্রীড়ার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হেভিওয়েট বলা হয়। স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড তাঁকে শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় ও বিবিসি শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্মানিত করে।

১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ২২ বছর বয়সে সনি লিস্টনকে পরাজিত করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন।
শিরোপা জয়ের পর তিনি দ্রুত খ্যাতির শীর্ষে পৌছে যান। এ সময় তিনি ঘোষণা দেন যে, আমি নেশন অব মুসলিম(Nation of Muslim) গোত্রের সদস্য।” তাঁর নাম রাখা হয় ক্যাসিয়াস এক্স, কারণ তিনি মনে করতেন তার পদবি দাসত্বের পরিচায়ক। এর কিছুদিন পর গোত্র প্রধান সাংবাদিকদের কাছে তাঁকে মুহাম্মদ আলি বলে পরিচয় করিয়ে দেন।কথিত হয় তিনি সুন্নি সুফি শায়খ হিশাম কাব্বানীর হাতে মুরিদ হন।

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না-হওয়ার কারণে ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হন । ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উত্তীর্ণ হন। তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে যেতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “কোরআন যুদ্ধ সমর্থন করে না। আল্লাহ বা নবির নির্দেশ ছাড়া আমি যুদ্ধে যাব না। কোনো ভিয়েতকং-এর সঙ্গে আমার বিরোধ নেই, তারা কেউ আমাকে কালো বলে গালিও দেয়নি।” তিনি ক্যাসিয়াস ক্লে বলে পরিচিত হতে চাননি। এ কারণে তিনি ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকায় লড়াইয়ে অংশ নেননি।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে মুহাম্মদ আলি জো ফ্রেজিয়ারের মুখোমুখি হন যা ‘শতাব্দীর সেরা লড়াই’ হিসাবে পরিচিত। বহুল আলোচিত এ লড়াইটি ছিল দুই মহাবীরের লড়াই। জো ফ্রেজিয়ার খেলায় জয়লাভ করেন এবং আলি প্রথমবারের মত পরাজিত হন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ফিরতি লড়াইয়ে মুহাম্মদ আলি শিরোপা পুনরুদ্ধার করেন।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার মতে এ জন্য ভূমিকা রাখেন নেশন অব ইসলাম এর প্রধান ডব্লু. ডি. মুহাম্মদ। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে আলি লড়াই করেন ফ্রেজিয়ার এর সঙ্গে। দুজন বীরের এ লড়াইয়ের জন্য সকলে খুবই উত্তেজিত ছিল। ১৪ রাউণ্ডের শেষে ফ্রেজিয়ার এর কোচ তাকে আর লড়াই করতে দেননি কারণ তার এক চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফ্রেজিয়ার এর কিছুদিন পরই অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের এক লড়াইয়ে তিনি ১৯৭৬ এর অলিম্পিক মেডালিস্ট লিয়ন স্পিংক্স এর কাছে খেতাব হারান। তিনিই প্রথম যিনি একজন অপেশাদার এর কাছে হেরেছিলেন। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মদ আলী অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা জুন, শ্বাসনালীর সংক্রমণে অ্যারিজোনায় মুহাম্মদ আলী মারা যান।
———————————————————
শুবাচ গ্রুপের লিংক: www.draminbd.com