ড. মোহাম্মদ আমীন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম শহিদ এবং প্রথম প্রতিরোধকারী
কুমিল্লার তৎকালীন জেলপ্রশাসক শামসুল হক খান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম শহিদ। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের পূর্বে তিনি জেলাপ্রশাসক হিসেবে কুমিল্লা যোগদান করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে মার্চ রাতে কুমিল্লা সার্কিট হাউস থেকে মেজর আগা ও ক্যাপ্টেন বোখারীর নেতৃত্বে এক দল পাকিস্তানি বাহিনী শামসুল হক ও পুলিশ সুপার মুন্সি কবির উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা পর তাদের হত্যা করা হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে মার্চের পূর্বে পুলিশ সুপার মুন্সি কবির উদ্দিন, ড. আব্দুস সাত্তার, অধ্যাপক খোরশেদ আলম এমসিএ, আলী আহমেদ এমসিএ প্রমুখকে সঙ্গে নিয়ে শামসুল হক খান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আগাম প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেন। ৭ই মার্চের পর এবং ২৫ শে মার্চের পূর্বে শামসুল হক খানের নেতৃত্বে এ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল। এর পূর্বে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের এত উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা এমন সুসংঘটিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেননি। তাই শামসুল হক খান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধকারী হিসেবেও স্বীকৃত।
জেলাপ্রশাসক শামসুল হক খানের নির্দেশে কুমিল্লা সেনানিবাসে রেশন ও পরিবহন জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে কুমিল্ল সেনানিবাসের পাকিস্তানি সেনারা তাঁর উপর ক্ষুব্ধ ছিল। কুমিল্লার ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফির নেতৃত্বে সেনাসদস্যরা পুলিশের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করতে গেলে পুলিশ সুপার মুন্সি কবির উদ্দিন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ ছাড়া স্টোরের চাবি হস্তান্তরে অপারগতা জানান। এ নিয়ে আলোচনার জন্য স্থানীয় সামরিক আইন প্রশাসক ডেকে পাঠালে বেসামরিক প্রশাসনের জেলাপ্রধান শামসুল হক খান অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁর এ আচরণে পাকিস্তাানি সেনাকর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ২৫ শে মার্চ রাতে কুমিল্লা সার্কিট হাউস থেকে মেজর আগা ও ক্যাপ্টেন বোখারীর নেতৃত্বে তাঁকে ও পুলিশ সুপার মুন্সি কবির উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগের জন্য শহীদ শামসুল হক খানকে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা পদক” প্রদান করা হয়। তাঁর নামে কুমিল্লায় একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিয়াম মিলনায়তনের ভাষণকক্ষটির নামও তাঁর নামে করা হয়েছে। তবে এর দ্বারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম শহিদ ও প্রথম প্রতিরোধকারী হিসেবে তিনি উপুয্ক্ত স্বীকৃতি পেয়েছেন কি না তা আলোচনার দাবি রাখে। এর চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেও বীরশ্রেষ্ঠ হয়েছেন অনেকে।
মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ
মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠিত হয় : ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ গাজিপুরে।
স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর
ডা. আব্দুল মোতালেব মালিক ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর। প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ শে অগাস্ট ডা. আব্দুল মোতালেব মালিককে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিয়োগ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩ রা সেপ্টেম্বর মালিক শপথ গ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বশেষ সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা সেপ্টেম্বর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘বি’-জোন অর্র্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক এবং পুর্বাঞ্চলীয় রণক্ষেত্রের পাকিস্তানি সেনাপতি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী পুর্ব পাকিস্তানের সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ ছিলেন।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ : মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ও সেক্টর কমান্ডার
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ : অপারেশন জ্যাকপট
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ : মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহিদ প্রথম প্রতিরোধকারী