ড. মোহাম্মদ আমীন
হজরত আরবি শব্দ। সম্মানসূচক জনাব শব্দের মতো ‘হজরত’ লিঙ্গনিরপেক্ষ। আরবি হতে আগত বলে অনেকে ‘হজরত’ শব্দকে একান্তভাবে ইসলাম ধর্মীয় শব্দ মনে করেন। আসলে তা ঠিক নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি ধর্মনির্বিশেষে ব্যক্তির সম্মানজনক পরিচয় প্রদানে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন নাটকে হজরতে আলা কথাটি অনেকে শুনে থাকবেন।
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানমতে, বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত ‘হজরত’ শব্দের অর্থ— সম্ভ্রমের পাত্র, মহাত্মা, অতি সম্মানীয় ব্যক্তি। অষ্টম শতকের প্রথমদিক থেকে শব্দটি উপমহাদেশে এসব অর্থ প্রকাশে বিশেষ করে মুসলিম সম্ভ্রান্ত ও সম্মাননীয় ব্যক্তিবর্গের নামের আগে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে উপমহাদেশে শব্দটির ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবহারের নজির রয়েছে। অনেক মুসলিম ব্যক্তিত্ব সম্মান করে অমুসলিমকেও হজরত বলেছেন এবং বলেন।
উপমহাদেশে মুসলিম শাসনামল শুরু হলে মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের নামের আগে হজরত শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার সূচিত হয়।ফলে অনেকের এমন ধারণা সৃষ্টি হয় যে, হজরত শব্দটি কেবল ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষায় বিদগ্ধ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তা ঠিক না হলেও দীর্ঘ ব্যবহার ও প্রায়োগিক কারণে বেশির ভাগ লোক মনে করেন— হজরত শব্দটি কেবল ইসলাম ধর্মবিষয়ক জ্ঞান বিদগ্ধ বোদ্ধাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। জনাব অর্থেও হজরত শব্দের ব্যবহার রয়েছে।
উদাহরণ:
হজরত (সম্ভ্রমের পাত্র) : হজরতগণের আগমনে মজলিশ সফল হয়ে গেল।
হজরত (মহাত্মা) সলিমুল্লাহ খান বললেন, হজরত আহমদ ছফা বাংলা সাহিত্যের একজন কালজয়ী প্রাবন্ধিক।
হযরত (অতি সম্মানের পাত্র) : হজরত আবদুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
—————
বিসিএস প্রিলি থেকে ভাইভা কৃতকার্য কৌশল
ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা বইয়ের তালিকা
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক