ড. মোহাম্মদ আমীন
সমতট নামটি বর্ণনামূলক, জাতিবাচক নয়। সমুদ্রগুপ্তের সময় থেকে (চার শতক) স্বতন্ত্র অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। এলাহাবাদ প্রশস্তিতে ডবাক, কামরূপ, নেপাল ও কর্তৃপুর-এর সঙ্গে সমতট পূর্ব সীমান্তে প্রত্যন্ত রাষ্ট্র বলে উল্লেখ আছে। বৃহৎসংহিতা-য় (ছয় শতক) বঙ্গ থেকে পৃথক একটি জনপদ হিসেবে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। সাত শতকে বাংলা ভ্রমণকালে হিউয়েন সাং লিখেছেন, কামরূপ (পূর্ব আসাম) থেকে দক্ষিণ দিকে ১২০০-১৩০০ লি (প্রায় ৩৫০ কিমি) অতিক্রম করে তিনি সমতট (সান-মো-তট-অ) পৌঁছেন, যার প্রদক্ষিণ পথ ছিল প্রায় ৩০০০ লি (প্রায় ৮০০ কিমি)। ই-ৎসিঙ উল্লেখ করেন, চৈনিক শ্রমণ শেং চি সাত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এ অঞ্চল পরিভ্রমণ করার সময় রাজভট্ট ছিলেন সমতটের শাসক। এই রাজভট্টই খড়গ বংশের রাজা রাজভট্ট। তার রাজধানী ছিল কর্মান্তবাসক, যা কুমিল্লর বড় কামত। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে কৈলাণ থেকে উদ্ধারকৃত শ্রীধারণ রাত-এর তাম্রশাসনে রাজাকে ‘সমতটেশ্বর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যার রাজধানী ছিল দেবপর্বত। দশ শতকে চন্দ্ররাজাদের তাম্রশাসনেও সমতট ও দেবপর্বতের উল্লেখ আছে। লালমাই পাহাড় ও ময়নামতীতে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে দেবপর্বতের সম্পৃক্ততা ছিল।
বাংলার প্রাচীন জনপদগুলোর নাম ও তালিকা নিম্নে দেওয়া হল: