হ-এর কথা নিমোনিক: ব্যাকরণ ছাড়া প্রমিত বাংলা বানান শেখার কৌশল
ড. মোহাম্মদ আমীন
হ-কার ও হকার: হকার মানে— হ- বর্ণ। যেমন: হ-কারে চন্দ্রবিন্দু দিয়ে হাঁস বানান লিখতে হয়। হাঁটু ছাড়া হাঁটা যায় না। তাই শব্দদুটোর হ-কারে চন্দ্রবিন্দু

দিতে হয়। হকার মানে— বাড়ি বাড়ি গিয়ে পণ্য ফেরি করা বা রাস্তার ধারে পণ্য বিক্রি করা যার পেশা, ফেরিওয়ালা। ‘হ-কার’ আর ‘হকার’ শব্দের অর্থ দেখে বোঝা গেল, হাইফেন কখনো কখনো শব্দের অর্থও পরিবর্তন করে দেয়।
হজ: শব্দের বানানে ‘জ-য়ে’, ‘অন্তঃস্থ-ব’ অনাবশ্যক। আগে দেওয়া হতো। এখন দেওয়া হয় না। মনে রাখবেন, তখন হজে যেতে হলে জাহাজে বসে যেতে হতো। তাই জ-য়ে অন্তঃস্থ-ব ছিল। এখন বিমান চড়ে সাঁ করে ‘হজ’ করার জন্য চলে যাওয়া যায়।
হট্টমন্দির: ‘হট্টমন্দির’ আসলে কোনো মন্দির নয়—হাটে দোকানরূপে ব্যবহৃত চালাঘর। এসব চালঘরে হট্টগোল হয়। হট্টগোলের মাধ্যমে ক্রেতাবিক্রেতার আবেদন-নিবেদন ও দরদাম চলে। এসব কাজে হট্টগোল হয়। তাই এর নাম হট্টমন্দির। এর মানে হট্টগোলের মন্দির।
হতাশাব্যঞ্জক—শব্দটির বানানে দুটি ‘আ-কার’ আছে এবং দুটোই হতাশার আ-কার। দুটি আ-কার ছাড়া কখনো হতাশা হয় না। তবে ‘ব্য’-য় কোনো আকার নেই। ব্যয় বেশি হলে হতাশা আসে। ‘ব্যয়’ বানানে আ-কার নেই। ব্যঞ্জন বানানেও আকার নেই। তাই হতাশাব্যঞ্জক বানানেও আ-কার নেই।
হন্য ও হন্যে: হন্য শব্দের অর্থ হনন করার যোগ্য, বধযোগ্য। যাকে হত্যা করা যায়। কিন্তু ‘হন্যে’ শব্দের অর্থ কিছু করার বা পাওয়ার জন্য ব্যাকুলভাবে চেষ্টাযুক্ত, উদ্ভ্রান্ত। অতএব, শব্দ-দুটো লেখার সময় বিশেষ করে এ-কার প্রয়োগে সাবাধান থাকতে হবে। তাই কেউ ‘হন্য’ হয়ে কিছু খুঁজতে যায় না, ‘হন্যে’ হয়ে খুঁজতে যায়।
হয়তো : হয়তো শব্দের অর্থ — সম্ভবত। যেমন: হয়তো কিছুই নাহি পাব। তবে ‘হয়’ আর ‘তো’ ফাঁক করে লিখলে অন্যরকম অর্থ হয়ে যায়। যেমন: তারা পরস্পর ভাইবোন হয়, তো কী হয়েছে?
——————————————————————————————————————————————
——————————————————————————————————————————————–