ড. মোহাম্মদ আমীন
মাম লিখতে বলেছে, “এক ফোঁটা জল পেলে সজীব হয়ে ওঠত ফোটা ফুলটা।”
শামীমা লিখল, “এক ফোটা জল পেলে সজীব হয়ে ওঠত ফোঁটা ফুলটা।”
বাক্যটি বারবার দেখছিল শামীমা ।
ফোটা আর ফোঁটা নিয়ে ভারি মুশকিলে পড়ে যায় সে।
২
হঠাৎ শামীমার চুল থেকে তারার মতো দুই বিন্দু জল খসে পড়ল খাতায়। এক বিন্দু জল ‘ফোটা’ শব্দের ‘ফ’ বর্ণে চন্দ্রবিন্দু হয়ে বসে গেল। আর এক বিন্দু জল ‘ফোঁটা’ শব্দের চন্দ্রবিন্দুটা অমাবস্যার চাঁদের মতো বিলীন করে দিল।
হায় হায়, কী হবে, বানান ভুল হলে তো মা আস্ত রাখবে না। শামীমা হাত দিয়ে ‘ফোঁটা’ আর ‘ফোটা’ শব্দদুটোকে আগের মতো করতে যাবে এসময় তার মাম এসে গেল।
৩
খাতা দেখে মাম বলল, এতদিন পর তুমি ফোঁটা আর ফোটা শব্দের বানান ঠিকভাবে লিখতে পারলে।মা আমার ভালো হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
শামীমা খুশি হলো। কিন্তু সে তো জানে এই কৃতিত্ব তার নয়, চুলবিন্দুজলের।
আসল কথা জানিয়ে দেওয়ার জন্য মামকে বলল,
শুদ্ধ কীভাবে হলো জান মাম?
মাম বলল, জানি।
কীভাবে?
মাম বলল, ‘ফোঁটা’ শব্দের অর্থ হচ্ছে তরল পদার্থের বিন্দু, টিপ, তিলক, ছোটো, বিন্দুচিহ্ন ইত্যাদি। তাই তুমি বিন্দু অর্থ প্রকাশিত ফোঁটা শব্দের মাথায় চন্দ্রবিন্দু দিয়েছ। আমরাও ছোটোবেলায় এভাবে মনে রেখেছি। ‘ফোটা’ শব্দের অর্থ প্রস্ফুটিত হওয়া, প্রকাশিত হওয়া, বিস্ফোরিত হওয়া, সেদ্ধ হওয়া, উন্মিলিত হওয়া ইত্যাদি। এখানে বিন্দুর কোনো কাজ নেই। তাই তুমি বিন্দু দাওনি। ঠিক বলেছি না?
৪
মায়ের কথায় শামীমা বুঝে গেল ফোঁটা আর ফোটা কী। সে আর আসল কথা খুলে বলল না।
বুদ্ধিমান মেয়ের মতো বলল, মাম, তুমি বড্ড চালাক। কিন্তু – – –
কিন্তু আবার কী?
আমি তোমার চেয়েও চালাক।
শামীমার মাম বলল, দেখতে হবে না মেয়েটা কার!