ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, সচিব (অব.), রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, বঙ্গভবন
বঙ্গভবন বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, মর্যাদা, সাহসকিতা, ষড়যন্ত্র প্রভৃতি-সহ আরও অনেক কালজয়ী ঘটনা-প্রতিঘটনার স্থাপনিক প্রমাণ হিসেবে গৌরবের নির্বাণ হয়ে দাঁড়িয়ে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজ, ব্রিটেনের বাকিংহাম প্যালেস,
১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর গভর্নরের বাসভবন হিসেবে ব্যবহার উপলক্ষ্যে নির্মিত এই ভবন কত হৃদয় বিদারক ঘটনা আর আনন্দ বেদনার সাক্ষি- তা কয়জনই বা জানেন? অথচ এই ভবনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে শতকের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিমুগ্ধকর ঘনঘটা, মর্মান্তিক ষড়যন্ত্র, হত্যার নীলনক্সা এবং সর্বশেষ মহান স্বাধীনতার অনুপম জয়ের গর্বিত স্মারক। যা আমাদের ঐতিহ্যকে পরম উৎকর্ষে বৈশ্বিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। এখনো প্রতিনিয়ত বয়ে চলেছে ঘটনা আর প্রতিঘটনার রাষ্ট্রিক প্রবাহ। যা গ্রন্থটিতে ধারবাহিকভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
বঙ্গভবন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন। রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে বঙ্গভবনও রাষ্ট্রের প্রধান ভবন হিসেসে অসীম গুরুত্বের অধিকারী। নির্মাণের পর থেকে বঙ্গভবন বাংলাদেশ ভূখ-ের রাষ্ট্র প্রধানের বাসভবন হিসেবে সর্বপ্রকার রাষ্ট্রীয় কার্যাক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। এই ভবনে বাস করেই রাষ্ট্রপ্রধানগণ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আলোচ্য গ্রন্থটি বঙ্গভবেন বসবাসকারী প্রত্যেক রাষ্ট্রনায়কের জীবনী ও কার্যক্রম নিয়ে রচিত একটি ঐতিহাসিক জীবনীগ্রন্থ। গ্রন্থটি পড়ে আমার মনে হয়েছে এখানে ঘটনা ও তার প্রবাহ নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বর্ণিত হয়েছে। বইটি আপনার সংগ্রহকে করবে সমৃদ্ধ এবং আপনার জ্ঞানকে করবে ঋদ্ধ ও ঐতিহ্যমুগ্ধ। এমন একটি গ্রন্থ রচনার জন্য আমি ড. মোহাম্মদ আমীনকে ধন্যবাদ জানাই।


নির্মাণের পর থেকে বঙ্গভবনে কোন কোন গভর্নর, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রপধানগণ বসবাস করেছেন, কতদিন বসবাস করেছেন, বসবাসকালীন কে কী ভূমিকা পালন করেছেন, ইতিহাসে এঁদের কার কী ভূমিকা ছিল এবং কেমন ছিল তাদের সার্বিক কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপান তা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বাস্তবতার আলোকে এই গ্রন্থে তাঁদের জীবনীসহ আলোচনা করা হয়েছে। বিসিএস-সহ যে-কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য বইটি হতে পারে প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছার একটি কার্যকর হাতিয়ার। অধিকন্তু, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং গবেষকবৃন্দ ছাড়াও যে-কোনো পাঠক গ্রন্থটির তথ্যপ্রবাহে মুগ্ধ ও ঋদ্ধ হবেন- এটি নিশ্চিত বলা যায়। আমি যখন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির জন বিভাগের সচিব তখন গ্রন্থের লেখক ড. মোহাম্মদ আমীন ছিলেন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির আপন বিভাগের উপসচিব। সেসময় তিনি গ্রন্থটি রচনার রসদ সংগ্রহ করেন। আমি মনে করি গ্রন্থটিতে সঠিক তথ্য নিবন্ধিত হয়েছে।
ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম