ড. মোহাম্মদ আমীন
কল্পনা ও জল্পনা দুটি শব্দ। এ দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত হয়েছে জল্পকল্পনা। হেমন্ত উদার গলায় মুগ্ধ সুরে গেয়েছেন, কল্পনা আর জল্পনায় :
এমন আমি ঘর বেঁধেছি, আহারে যার ঠিকানা নাই
স্বপনের সিঁড়ি দিয়ে যেখানে পৌঁছে আমি যাই।
স্বপনের সিঁড়ি দিয়ে যেখানে পৌঁছে আমি যাই।
– – –
অঙ্গনে তার আল্পনা দেয় আমারই সব কল্পনা
ছোট্ট চাওয়ায় দল বেঁধে যায় অনেক পাওয়ার জল্পনা।
ছোট্ট চাওয়ায় দল বেঁধে যায় অনেক পাওয়ার জল্পনা।
কবি লিখেছেন, কল্পনাতে তোমায় ছুঁয়েছি —, শিল্পী গেয়েছেন, “কল্পনাতে তোমার আকাশ অনেক বড়ো।” এবার দেখা যাক, কল্পনা শব্দের অর্থ।
‘কল্পনা’ শব্দের অর্থ অলীক, মনগড়া বিষয়, কবির সৃষ্টি, রচনা, ধারণা, আন্দাজ, অনুমান প্রভৃতি। ‘অলীক’ শব্দের অর্থ বিশেষ্যে, মিথ্যা, অসত্য, ললাট, কপাল এবং বিশেষণে কাল্পনিক। সুতরাং, কল্পনা অর্থ : মিথ্যা, অসত্য; মনগড়া বিষয়, কবির সৃষ্টি, রচনা, ধারণা, আন্দাজ, অনুমান প্রভৃতি।কল্পনা শব্দটি ললাট বা কপাল অর্থে খুব কম ব্যবহৃত হয়।অন্যদিকে, জল্পনাকল্পনা শব্দের অর্থ-আলাপ আলোচনা, পরামর্শ, অনুমান প্রভৃতি। এবার বাক্যে শব্দত্রয়ের বহুল প্রচলিত অর্থগুলোর পদার্থ দেখা যাক :
খবরে প্রকাশ, মাহমুদ সাহেবের কল্পনাকে (ধারণা, আন্দাজ, অনুমান) তদন্ত কমিটি নিছক

কল্পনা (মিথ্যা, অসত্য) আখ্যায়িত করে বাতিল করে দিয়েছে। কমিটির অভিমত, এমন কল্পনা (মনগড়া বিষয়) কেবল কল্পনা (কবির সৃষ্টি, রচনা) হতে পারে; জল্পনাও (আলাপ আলোচনা, অনর্থক কথন, বাচালতা) চলতে পারে; তবে দৃশ্যমান কিছু নয়। কমিটির সদস্যবর্গ জল্পনাকল্পনা ( আলোচনা, পরামর্শ) করে সব জল্পনাকল্পনার (অনর্থক কথন, বাচালতা) অবসান ঘটালেন।
এই প্রসঙ্গে জনাব ম্যানুয়েল ত্রিপুরার একটি উদাহরণ প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় প্রদান করা হলো : “শুবাচ-এর নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনেক জল্পনার পরে একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো যে, এ মাসের শেষ সপ্তাহে শুবাচিদের নিয়ে এক মিলনমেলা বসবে। কিন্তু তাঁরা একটা ব্যাপার কল্পনাও করেননি যে, যাঁর হাতে শুবাচ-এর সৃষ্টি, যিনি শুবাচ-এর কর্ণধার এবং অভিভাবকও, তিনি কোন মিলনমেলায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তবে অনেক জল্পনাকল্পনার পরে অ্যাডমিন প্যানেলের একাংশ আশার বাণী শুনিয়েছেন যে, সকল শুবাচির কাঙ্ক্ষিত অভিভাবককে নিয়েই মিলনমেলাটি হবে এবং সেটা বান্দরবানে।