ড. মোহাম্মদ আমীন
তাপস, নিশ্বাস ও বায়ে এই তিনটি শব্দ মিলে ‘তাপসনিশ্বাসবায়ে’ কথাটি গঠিত। ‘তাপস’ শব্দের অনেক অর্থ আছে। তবে এখানে বর্ণিত ‘তাপস [তপস+অ (অণ্)]’ অর্থ তাপসম্বন্ধীয়, তাপসোচিত; তাপবিশিষ্ট; এমন শক্তি যা পদার্থের অণুর বিক্ষিপ্ত গতিদ্বারা প্রকটিত হয় এবং যা উষ্ণতর পদার্থ থেকে শীতলতর পদার্থে প্রবাহিত হয়; উষ্ণ, তপ্ত। এই অর্থে শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছে ‘গীতগোবিন্দ’ কাব্যে (তাপসং ব্রতমাশ্রিত্য)। ‘নিশ্বাস’ অর্থ শ্বাসবায়ু, দম। ‘বায়ে’ অর্থ বাতাসে। সুতরাং, ‘তাপসনিশ্বাসবায়ে’ অর্থ দম বা নিশ্বাসের মতো নির্গত তপ্ত বাতাসে, উষ্ণতার কারণে সৃষ্ট দমরূপ বাতাসে; উষ্ণ হতে শীতলের দিকে প্রবাহিত বাতাসে; (আলংকারিক) ‘কালবৈশাখি, প্রবল ঝড়বৃষ্টি; অপ্রতিরোধ্য তপ্ত বাতাসে, বৈশখি তপ্ত হাওয়ায়, এমন বাতাস যা প্রবলবেগে বাহিত হয়ে তপ্ততা নিয়ে আসে।
সূত্র:
-
গীতগোবিন্দ/গীতগোবিন্দম, জয়দেব।
-
অমরকোষ।
-
বঙ্গীয় শব্দকোষ (প্রথম খণ্ড), হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় (পৃষ্ঠা: ১০৩৬)।