ড. মোহাম্মদ আমীন
সস্তার তিন অবস্থা— এই তিন অবস্থা কী?
এই তিন অবস্থা হচ্ছে— আ আ এবং আ = আও! আহা! এবং আহ্!
প্রথম ‘আ’ হচ্ছে আনন্দ, দ্বিতীয় ‘আ’ হচ্ছে আহাম্মকি এবং তৃতীয় ‘আ’ হচ্ছে আফসোস। এবার তিন অবস্থার ব্যাখ্যা দিচ্ছি।
মাহমুদ সাহেব বাজারে গেলেন ইলিশ কিনতে। দাম বেশি বলে না-কিনে ফেরত আসছেন। কিছুদূর আসার পর দেখলেন পথে এক লোক ইলিশ বিক্রি করছেন। দাম বাজারের অর্ধেকের চেয়েও কম। তার কাছ থেকে মাহমুদ সাহেব মাঝারি সাইজের এক হালি ইলিশ দুই হাজার টাকা দিয়ে কিনে নিলেন। বাজারে এ সাইজের ইলিশ কিনতে লাগত কমপক্ষে তিন হাজার ছশ টাকা। চোখের পলকে ষোলোশ টাকা লাভ। আনন্দে মাহমুদ সাহেবের মন ফুরফুরে হয়ে গেল। এটি সস্তার প্রথম অবস্থা।
.
সস্তা না পেলে মাহমুদ সাহেব একটা ইলিশই কিনতেন। তখন খরচ হতো মাত্র নয়শ টাকা। কিন্তু সস্তা বলে আনন্দের আতিশয্যে আহাম্মকি করে দুই হাজার টাকায় চারটা কিনে নিলেন। এটি আহাম্মকি।
.
ইলিশ হাতে আনন্দিত মন নিয়ে কয়েক পা এগোনোর পর মনে পড়ে গেল ছোটো শালির কথা। মাছওয়ালার কাছ থেকে আরো দুটো ইলিশ কিনে শালির বাসায় পাঠিয়ে দিলেন। এটিও আহাম্মকি। এরূপ আহাম্মকিকে আতিশয্যিক আহম্মকিও বলা যায়। এটি সস্তার দ্বিতীয় অবস্থা।
.
বাসায় ঢুকে বউয়ের হাতে মাছের থলে তুলে দিয়ে আনন্দচিত্তে বাথ রুমে ঢুকলেন মাহমুদ সাহেবে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাথ রুমের দরজায় আঘাত। অসমাপ্ত অবস্থায় বের হয়ে দেখলেন, বউয়ের এক হাতে ইলিশের থলে অন্য হাতে বটি। বাসা দুর্গন্ধে ভরে গেছে। কিছু বলার আগে বউ ইলিশের থলেটা মাহমুদ সাহেবের দিকে ছুড়ে দিয়ে বললেন, পচা মাছগুলো পুরো বাসাকে গন্ধময় করে দিয়েছে। এক্ষুনি ফেরত দিয়ে এস। নইলে তোমাকে এই বটি দিয়ে মাছে মতো – – -।
মাহমুদ সাহেব আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য বললেন, ইলিশ পচা হলেও খাওয়া যায়।
বউ বললেন, আরে আহম্মক, এগুলো ইলিশ মাছ নয়, চৌক্কা।
তখনই রিং করলেন মাহমুদ সাহেবের শালি, দুলাভাই আপনার মাছের গন্ধে বাসায় থাকা যাচ্ছে না। আমার স্বামী বমি করে দিয়েছে। এমন অপমানটা না-করলেই কী হতো না?
সূত্র: বাংলা ভাষার মজা, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.