ড. মোহাম্মদ আমীন
কথা— ধরলে অনেক কিছু, না ধরলে কিছুই না: কথার অপর নাম অযথা
১. প্লিজ, আপনার স্ত্রীর নাম্বারটা দিন।
আমার স্ত্রী কি গাড়ি, যে নাম্বার থাকবে?
সরি।
২. মা বললেন, তোমার ডিমটা অনেক্ষণ ধরে টেবিলে পড়ে আছে। ঠান্ডা হয়ে যাবে, খেয়ে নাও।
ছেলে বলল, ওটা আমার ডিম নয়।
কার ডিম?
মুরগির ডিম। মানুষ কি ডিম পাড়ে?
সরি।
৩. অনেক দিন পর আমেরিকা থেকে রিং করল জাভেদ, কেমন আছ?
বাংলাদেশ থেকে বন্ধু আরিফ বলল, তুমি ফোন দাও না কেন? ফোন দেওয়ার কথা ছিল না?
ফোন দেব, চিন্তা করো না।
তাহলে একটা আইফোন দিও। আমেরিকায় নাকি আইফোন বেশ সস্তা।
সরি। ফোন নয়, রিং দেব।
রিং মানে আংটি, আংটি দেবে?
না।
ফোন করব।
তাই বলে।
৪. স্বামী বললেন, এত চিল্লাচিল্লি করছ কেন?
স্ত্রী বললেন, তোমার মেয়ের সব মাংস কুকুরে খেয়ে ফেলেছে।
পড়ার রুম থেকে মেয়ে বলল, বাবা, আমার মাংস নয়, গোরুর মাংস।
সরি।
৫. হোটেল বয় বললেন, আপনি গোরু, খাসি, মুরগি না কি মাছ?
ক্রেতা বললেন, আমি গোরু, খাসি, মুরগি-মাছ কিছুই না।
তাহলে আপনি কী?
মানুষ।
বয় বললেন, সরি, স্যার — আমাদের হোটেলে নরমাংস পাওয়া যায় না।
৬. প্রকাশক শ্যামল পালের অফিসে দুপুরের খাওয়ার খাচ্ছিলাম। এক টুকরো মুরগির মাংস আমার পাতের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, মাংসটা নিন।
ধন্যবাদ, খাব না, আমি বললাম।
খুব স্বাদ পাবেন। শ্যামল পাল বললেন, “আপনার ভাবির হাতের মাংস।
আমি বললাম, আমি ভাবির হাতের মাংস খাই না।
এমন আরও আছে। জানা থাকলে বলুন।
৭. দরজার কড়া নড়ছে – টক টক টক। নিশ্চয় কোনো আগন্তুক।
গৃহস্বামী চিৎকার দিলেন, কে?
আমি, বাহির থেকে আগন্তুকের গলা ভেসে এল।
গৃহস্বামী বললেন, আমি কে?
আগন্তুক বললেন, তুমি কে তার আমি কি জানি?
৮. ভাত খেয়েছ?
খেয়েছি।
কী দিয়ে খেয়েছ?
হাত দিয়ে ।
আরে ভাই, আমি জানতে চাইছি- মানে কী কী দিয়ে খেয়েছ?
আমার হাত, আমার আঙুল, আমার দাঁত, আমার জিহ্বা – এসব দিয়ে আর কী!
৯. বাবা বললেন, ওই শোনো ঘণ্টা পড়ে গেছে, তাড়াতাড়ি করো।
কী পড়ে গেছে?
ঘণ্টা।
ঘণ্টা পড়ে না, ঘণ্টা বাজে।
সরি।
১০. নজরুল কোথায়? কমরেড মুজফ্ফর আহ্মদ (১৮৮৯-১৯৭৩) হন্তদন্ত হয়ে রুমে ঢুকে বললেন।
শৈলজানন্দ বললেন, পায়খানায় গেছে।
নজরুল পেছন থেকে এসে বললেন, পায়খানায় নয়, যায়খানায় গিয়েছি।
এরপর কোথায় যাবে?
পায়খানায়, মানে খাবার টেবিলে।
কী বলো, এসব?
নজরুল বললেন, যেখানে শরীরের খানা যায় সেটি পায়খানা আর শরীর যেখানে খানা সেটি পায়খানা।
১১. আপনি কী করেন?
পাশের সিটে বসা ছেলেটি বলল, আমি গাই।
ও আপনি গাই! তো কতটুক করে দেন?
কতটুকু করে দিই মানে?
বললেন আপনি গাই, তাই কতটুক করে দুধ দেন জানতে চাইছি।
আমি গাই মানে,গান করি।
সরি।
১২. বাবা ঢাকা যাবেন। ছেলে গেছে বাবার জন্য টিকেট আনতে। অনেকক্ষণ হয়ে গেল ছেলে আসে না।
বাবা বিরক্ত হয়ে মোবাইল করল ছেলেকে, তুমি এখন কী করছ?
টিকেট কাটছি।
খবরদার, তুমি আমার টিকেট কেটো না।
তোমার টিকেট যে আমি কেটে ফেলেছি।
হারামজাদা, টিকেট কেটে ফেললে আমি ঢাকা যাব কীভাবে?
১৩. কোথায় যাচ্ছ?
বিয়ে খেতে?
কী খেতে?
বিয়ে খেতে।
মানুষ ধান খেতে যায়, পাট খেতে যায়, কচু খেতে যায়, শসা খেতে যায়; বিয়ে খেতে যায় কীভাবে?
এই খেত শস্য খেত নয়। বলছি বিয়ে খবি।
বিয়ে কী করে খাবে?
বিয়ে খাব না।
কী খাবে?
বিয়ের নেমন্তন্ন খাব।
তাই বলো।
১৪. তোমার বাবা কোথায়?
চুল কাটতে গেছেন।
তোমার বাবা নাপিতগিরি শুরু করল কখন থেকে?
সরি, না মানে – বাবা চুল কাটাতে গেছেন।
তাই বলো।
১৫. রহিম চেয়ারম্যান পাড়ার ভবঘুরে ছেলেটাকে থানায় এনে ওসি সাহেবকে বললেন, একে আটকান।
এ কী করেছে?
নদীতে কুলি ফেলে দিয়েছে, একটা নয়, তিন তিনটা।
ওসি সাহেব ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি নদীতে কয়টা কুলি ফেলেছ?
তিনটা।
ওরা কোথায়?
নদীর জলে ভেসে গেছে।
তাহলে তোমার মৃত্যুদণ্ড অবশ্যম্ভাবী। কুলিগুলো নিশ্চয় এতক্ষণে মরে গেছে।
ভবঘুরে জসিম বলল, আমার কুলি মানুষ কুলি নয়।
কী কুলি?
মুখের কুলি।
১৬. আমার কথাটা ধরো। আখেরে লাভ হবে।
কথা কি ধরা যায়?
ধরলে অনেক কিছু, না ধরলে কিছুই না।
১৭. মজনু তুমি এখন বাজারে যাবে?
হ্যাঁ, বাবা।
এখন যেয়ো না।
কেন?
সূর্যটা এখন তো ঠিক মাথার ওপর।
কই, আমার মাথায় কোনো সূর্য নেই। বাবা, ইদানীং তুমি বেশ মিথ্যুক হয়ে গেছ।
১৮. হ্যালো !
১৯. স্যার, ঘণ্টা পড়ে গেছে।
২০. বাবা: তাড়াতাড়ি খেয়ে পড়ার টেবিলে বোসো।