প্রবাদ, সাহিত্য-প্রবাদ: বাংলা ভাষার প্রথম সাহিত্য-প্রবাদ: বিসিএস বাংলা: প্রিলিমিনারি ও ভাইভা

ড. মোহাম্মদ আমীন

প্রবাদ, সাহিত্য-প্রবাদ: বাংলা ভাষার প্রথম সাহিত্য-প্রবাদ: বিসিএস বাংলা: প্রিলিমিনারি ও ভাইভা

সাহিত্য-প্রবাদ অভিজ্ঞতার আলোকে লোকমুখে সৃষ্ট বাণী। বাণী বা প্রবাদের জন্যই ভাষা এবং পরবর্তীকালে সাহিত্যের সৃষ্টি। তাই ভাষা সৃষ্টির প্রথম বাণী বা কথাটিই ছিল প্রবাদ। ভাষা সৃষ্টির সূচনায় কথাই ছিল সাহিত্য এবং সাহিত্যই ছিল কথা। সংগত কারণে প্রথম সাহিত্য-প্রবাদ কোনটি তা জানা যায় না। বাংলা ভাষার জন্য কথাটি আরো কঠিনভাবে সত্য। আর্য আগমনের অনেক পূর্ব হতে বিদ্যমান আদি বাংলা ভাষার অস্তিত্ব, আর্য আগমনের পর হতে বিলুপ্ত হতে শুরু করে। ভারতবর্ষের অধিবাসীর মুখের ভাষা বাংলাকে সংস্কার করে গড়ে তোলা হয় সংস্কৃত। পরবর্তীকালে সংস্কৃতপ্রেমীদের কাছে বাংলায় হয়ে যায় সংস্কৃতের জননী/বোন। কলম আর ক্ষমতা থাকলে কী না হয়! যাই হোক, পণ্ডিতবর্গের মতে, ‘বৌদ্ধগান ও দোহা’য় ব্যবহৃত প্রবাদগুলোই বাংলা ভাষার প্রথম সাহিত্য প্রবাদ। এরূপ কয়েকটি প্রবাদ হলো :

১. হাথেরে কাঙ্কাণ মা লোউ দাপণ। (৩২ নম্বর পদ)। অর্থ: হাতের কঙ্কণ আছে কি নেই তা দেখানোর জন্য দর্পণের দিকে না তাকানো।

২. আপণা মাংসেঁ হরিণা বৈরী। (৬ নম্বর পদ)। অর্থ: হরিণ তার নিজের মাংসের জন্যই নিজের শত্রুস্বরূপ।

৩. হাড়ীত ভাত নাঁহি নিতি আবেশী। (৩৩ নং পদ)। অর্থ: হাঁড়িতে ভাত নেই অথচ নিত্য অতিথি আসে।

৪. দুহিল দুধু কি বেণ্টে যামায়। অর্থ: দোয়ানো দুধ কি বাঁটে প্রবেশ করে।

৫. সরস ভণস্তি বর সুণ গোহালী কিমো দুঠ্য বলন্দেঁ। (৩৯ নম্বর পদ)। অর্থ: দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।

Leave a Comment

You cannot copy content of this page